আজ পবিত্র আরাফাতের দিন। সারা বিশ্বের ১৫ লাখে বেশি হাজি হজের মূল কার্যক্রম পালন করতে আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হয়েছেন। লাখ লাখ হাজির উদ্দেশে মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা দিচ্ছেন মক্কার পবিত্র মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শায়খ ড. সালেহ বিন হুমাইদ।খুতবার শুরুতে তিনি মহান আল্লাহর প্রশংসা ও শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর দরুদ ও সালাম পাঠ করেন।এরপর সমবেত হাজিদের মহানবী (সা.)-এর নির্দেশনা অনুসরণ ও নিষেধাজ্ঞা থেকে বিরত থাকার উপদেশ দিয়ে বলেন, ‘আপনারা সবাই জীবনের সবক্ষেত্রে তাকওয়া তথা আল্লাহভীতি অবলম্বনের করুন। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘আপনি বলুন, আমি কি তোমাদের এর চেয়ে উৎকৃষ্ট জিনিসের সংবাদ দেব? যারা তাকওয়া অবলম্বন করে, তাদের জন্য তাদের রবের কাছে আছে এমন জান্নাত, যার তলদেশে নদ-নদী প্রবাহিত, যেখানে তারা সব সময় থাকবেন এবং (তাদের জন্য আছে) পবিত্র স্ত্রী ও আল্লাহর পক্ষ হতে সন্তুষ্টি। আল্লাহ সব বান্দাকে ভালোভাবে দেখছেন।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৫)
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দুপুর ১২টায় ও বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টার পর হজের খুতবা শুরু হয়।প্রতিবছরের মতো এবারও পবিত্র হজের খুতবা অনুবাদ সম্প্রচার করা হচ্ছে। সৌদি আরবের পবিত্র মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববীর তত্ত্বাবধানকারী বিভাগের অধীনে এবার বাংলাসহ ৩৪টি ভাষায় খুতবার অনুবাদ শোনা যাবে।
হজের খতিব ড. সালেহ মুমিনদের তাকওয়া অবলম্বনের আহ্বান জানান। তিনি পবিত্র কোরআনের আয়াত উল্লেখ করে বলেন, ‘যদি জনপদবাসী ঈমান আনত ও তাকওয়া অবলম্বন করত তাহলে আমি তাদের জন্য আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী থেকে কল্যাণধারা উন্মুক্ত করে দিতাম।কিন্তু তারা (সত্য) তা প্রত্যাখ্যান করল। তাই তারা যা করছিল এর জন্য আমি তাদের পাকড়াও করি।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ৯৬)
মহান আল্লাহ হাজিদের উদ্দেশে পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ‘হজের নির্দিষ্ট কয়েকটি মাস আছে। যে ব্যক্তি ওই সময়ে নিজের ওপর হজ অবধারিত করে নেয়, সে ওই সময়ে কোনো অশ্লীল কথা বলবে না, কোনো পাপ করবে না এবং ঝগড়াও নয়। তোমরা যা কিছু ভালো কাজ করবে আল্লাহ তা জানেন।আর (হজের সময়) তাকওয়া অবলম্বন করবে। মূলত তাকওয়াই উৎকৃষ্ট অবলম্বন।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৯৭)
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা ভালো কাজ ও তাকওয়ার কাজে একে অপরকে সাহায্য করো এবং তোমরা পাপচার ও শত্রুতামূলক কাজে একে অপরকে সাহায্য কোরো না। তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করো, নিশ্চয়ই আল্লাহ শাস্তিদানে কঠোর।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত : ২)এ বছর আরবি ছাড়াও আরো ৩৪টি ভাষায় হজের খুতবার অনুবাদ সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে। ভাষাগুলো হলো, আরবি, উর্দু, ইংরেজি, ফরাসি, ইন্দোনেশিয়ান, ফার্সি, হাউসা, চাইনিজ, রাশিয়ান, বাংলা, তুর্কি, মালয়, স্প্যানিশ, পর্তুগিজ, ইতালীয়, জার্মান, ফিলিপিনো, আমহারিক, বসনিয়ান, হিন্দি, ডাচ, থাই, মালায়লাম, সোয়াহিলি, পশতু, তামিল, আজারবাইজানীয়, সুইডিশ, উজবেক, আলবেনিয়ান, ফুলানি, সোমালি, রোহিঙ্গা ও ইওরুবা।
