বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, “৭ই নভেম্বর আমাদের আত্মচেতনা ও জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। সেই চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমাদের নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।”
শনিবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর তোপখানা রোডের বিএমএ ভবন অডিটোরিয়ামে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত “জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস এবং বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট” শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
আলাল বলেন, “৭ই নভেম্বর কোনো নির্দিষ্ট গণ্ডির ঘটনা নয়, এটি ছিল এক রাজনৈতিক ভূমিকম্প। যেমন ভূমিকম্পের আগে পৃথিবীর গভীরে চাপ সৃষ্টি হয়, তেমনি স্বাধীনতা-উত্তর সময়ে চলমান রাজনৈতিক টানাপোড়েন ও অস্থিরতার ফলেই ৭ই নভেম্বরের বিস্ফোরণ ঘটেছিল।”
তিনি আরও বলেন, “শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন ‘ম্যানুফ্যাকচার্ড মোরালিটি’-এর জীবন্ত উদাহরণ। তিনি নৈতিকতা, নেতৃত্ব ও দেশপ্রেমের মানদণ্ড স্থাপন করেছিলেন। জিয়া প্রমাণ করেছিলেন, তিনি সত্যিকারের দেশপ্রেমিক এবং রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিবেদিত নেতা।”
মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গে আলাল বলেন, “সিলেটের তেলিয়াপাড়া বৈঠকে প্রথম সেক্টর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পান জিয়াউর রহমান। পরে তিন বাহিনীর কাঠামোয় ‘জেড ফোর্স’-এর নেতৃত্বও তার হাতে ছিল—যা তার নেতৃত্বগুণের স্বীকৃতি।”
তিনি আরও বলেন, “গণভোট প্রবর্তনের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান জনগণের সরাসরি ম্যান্ডেট গ্রহণের নতুন পথ উন্মুক্ত করেছিলেন। তার সততা, দূরদর্শিতা ও আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা তাকে শুধু রাষ্ট্রপতি নয়, একজন প্রকৃত রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল।”
আলাল বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ার ঐক্যের প্রতীক ‘স্যার্ক’-এর ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন শহীদ জিয়া। তিনি বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ধারণা দিয়ে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব নাগরিককে এক সুতোয় গেঁথেছিলেন।”
বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন, “দেশে নানা ষড়যন্ত্র ও বিভাজনের মধ্যেও আমাদের মনে রাখতে হবে—ঐক্যই শক্তি, আর প্রজ্ঞাই নেতৃত্বের মূল গুণ। শহীদ জিয়া, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান—এই তিন প্রজন্মের নেতৃত্ব সেই প্রজ্ঞার ধারক।”
তিনি আহ্বান জানান, “স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা কঠিন। তাই সার্বভৌমত্ব অটুট রেখে অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাওয়া আমাদের সকলের নাগরিক দায়িত্ব। ৭ই নভেম্বরের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন ড্যাব সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশীদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, সহ–স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. পারভেজ আলম কাকনসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
