ঢাকা, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫,
সময়: ০১:১২:৫২ PM

নির্বাচনের তৃতীয় পদ্ধতি প্রস্তাব খেলাফতের

ষ্টাফ রিপোটার।। দৈনিক সমবাংলা
25-07-2025 12:39:04 PM
নির্বাচনের তৃতীয় পদ্ধতি প্রস্তাব খেলাফতের

দেশে বর্তমানে কার্যকর রয়েছে এফপিটিপি (ফার্স্ট পাস্ট দ্য পোস্ট) পদ্ধতির নির্বাচন। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন মহল, রাজনৈতিক দল ও পক্ষ পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি তুলেছে।আসন্ন নির্বাচন ঘনিয়ে আসার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস তৃতীয় একটি পদ্ধতির প্রস্তাব করেছে, যা এমএমপিআর (মিক্সড মেম্বার সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি বলা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে এ প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।এসময় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির আল্লামা মুহাম্মদ মামুনুল হক বলেন, এমএমপিআর পদ্ধতিতে জনমতের সঠিক প্রতিফলন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং ভোটারের ন্যায্য প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে।তিনি বলেন, ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। মানবজীবনের সব ক্ষেত্রে সর্বোত্তম সমাধান দিয়েছে ইসলাম। সর্বশ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক বন্দোবস্তও দিয়েছে ইসলাম। ইসলামে শাসক নির্বাচনের স্বতন্ত্র ব্যবস্থা রয়েছে, যা নিঃসন্দেহে সব ব্যবস্থার চেয়ে শ্রেষ্ঠ ও উত্তম। ইসলামী ব্যবস্থা কার্যকর না থাকায় এখন বিকল্প হিসেবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতির নির্বাচনকে মন্দের ভালো হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নানারকম নির্বাচন ব্যবস্থা রয়েছে জানিয়ে মামুনুল হক বলেন, আমাদের দেশে বর্তমানে কার্যকর রয়েছে এফপিটিপি পদ্ধতি। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন মহল ও রাজনৈতিক দল এবং পক্ষসমূহ পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের দাবি তুলেছে। উভয় পদ্ধতির নানারকম দুর্বলতা ও আমাদের বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং গণমানুষের মতামতের প্রকৃত প্রতিফলনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস তৃতীয় একটি পদ্ধতির প্রস্তাব করেছে, যা এমএমপিআর পদ্ধতি হিসেবে আখ্যায়িত হতে পারে।

প্রস্তাবিত পদ্ধতির বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রথমে চলমান এফপিটিপি পদ্ধতিতে ৩০০ আসনে নির্বাচন হবে এবং প্রতি আসনের বিপরীতে সর্বোচ্চ ভোট প্রাপ্ত ব্যক্তি সরাসরি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন। এরপর পিআর পদ্ধতিতে দলীয় প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতের হিসাব করা হবে। প্রত্যেক দল থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের অনুপাতের সঙ্গে দলের সাকুল্যে প্রাপ্ত ভোটের অনুপাত তুলনা করা হবে এবং যেসব দল তাদের প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে পর্যাপ্ত সংসদীয় আসন পায়নি, সেসব দলকে পিআর পদ্ধতিতে অতিরিক্ত আসন দিয়ে তাদের প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হবে। সে ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১ শতাংশ ভোটপ্রাপ্ত দল সংসদে প্রতিনিধিত্ব পাবে।

এতে সংসদীয় আসন সংখ্যা আগে থেকে চূড়ান্ত থাকবে না। ৩০০ আসনকে ভিত্তি ধরে সব অনুপাত নির্ধারণ করা হবে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়- নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো দল যদি ৫০ শতাংশ ভোট পায়, তাহলে তাদের প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১৫০ আসন পাওয়ার কথা। তারা যদি সেই পরিমাণ আসন না পায়, তাহলে সেই দলকে পিআর পদ্ধতিতে আসন দিয়ে ১৫০ আসন নিশ্চিত করা হবে। আবার কোনো দল যদি ৫ শতাংশ ভোট পায়, তাহলে তাদের প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১৫টি আসন পাওয়ার কথা। তারা যদি ১৫টি আসন না পেয়ে থাকে, তাহলে পিআর পদ্ধতিতে তাদের ১৫ আসন নিশ্চিত করা হবে।

খেলাফত মজলিসের আমির বলেন, নির্বাচনব্যবস্থার তিনটি উল্লেখিত পদ্ধতির মধ্যে এমএমপিআর তুলনামূলকভাবে শ্রেষ্ঠ বিবেচিত হতে পারে। এতে জনমতের সঠিক প্রতিফলন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং ভোটারের ন্যায্য প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে।তিনটি পদ্ধতির পরিচয় ও সংক্ষিপ্ত তুলনামূলক বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয় বৈঠকে।