ঢাকা, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫,
সময়: ০৯:৪৯:০৯ AM

বরিশাল শিল্পকলা ফের রঙ্গশালা বানানোর ষড়যন্ত্র !

স্টাফ রিপোটার।। দৈনিক সমবাংলা
27-06-2025 12:43:45 PM
বরিশাল শিল্পকলা ফের রঙ্গশালা বানানোর ষড়যন্ত্র !

শুরুটা বিগত স্বৈরশাসকের জামানায়। দশ বছর ধরে বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমীকে রঙ্গশালা বানিয়ে রেখেছিলেন সাবেক কালচারাল অফিসার মোহাম্মাদ হাসানুর রশিদ ওরফে মাকসুদ। অফিশিয়াল বিধি-বিধান, নিয়ম-নীতির প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মদ, জুয়া, অবৈধ নারীসঙ্গ থেকে শুরু করে অনিয়ম এবং অপরাধের নানান শাখায় তার অবাধ বিচরণ মাকসুদের। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে দুর্ণীাত এবং অনিয়মকে বরিশাল শিল্পকলায় স্বাভাবিক অভ্যাসে পরিণত করেন।  বরিশালের অফিস পাড়ায় ‘মাগির দালাল’ হিসেবে পরিচিত জেলার সাবেক শিল্পকলা অফিসার মাকসুদের অনিয়ম এবং অপরাধের তথ্য-প্রমাণসহ অসংখ্য অভিযোগ এসেছে এই প্রতিবেদকের কাছে। ২০১৫ সালের শুরুর দিকে বরিশাল শিল্পকলা অফিসে জেলা কালচারাল অফিসার হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহন করেন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক এই ক্যাডার হাসানুর রশীদ মাকসুদ। দায়িত্ব গ্রহনের কিছুদিন পরেই তিনি স্বরূপে আবির্ভুত  হন এবং এ সময় জেলার প্রধান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটিকে নিজের মেজাজ-মর্জিমতো পরিচালনা শুরু করেন। 
 নিজের অফিস কক্ষেই তিনি শিল্পকলা একাডেমীর প্রশিক্ষক অনিমেষ সাহা লিটুসহ বিভিন্ন স্থানীয় সাংবাদিক ও আওয়ামীলীগ নেতাদের নিয়ে প্রকাশ্যে মদ পান করতেন, রাতভর  খেলতেন জুয়া, বিভিন্ন নারী নিয়ে সময় কাটাতেন রাতের পর রাত। 

বরিশাল শিল্পকলায় কর্মরত স্টাফ ও স্থানীয়  লোকজনদের কাছ থেকে জানা যায়, রাতভর মদ ও জুয়ার আসরে ডুবে থেকে তিনি দিনের বেলায় অফিস কক্ষের দরজা বন্ধ করে ঘুমাতেন।  সারা সপ্তাহে শুধুমাত্র অর্থসংক্রান্ত কাগজপত্রে স্বাক্ষরের জন্য কয়েকঘন্টা কাজ করতেন। অফিসের বাকি সকল কাজ করতেন অফিস সহকারী সুলতানা ইয়াসমিন। 

বারিশালের সাবেক জেলা কালচারাল অফিসার হাসানুর রশিদ মাকসুদের দুর্নীতি, অনিয়ম অনাচার এবং স্বেচ্ছাচারিতার তালিকা বেশ দীর্ঘ। 

বরিশালের সাগরদি মাদরাসার একজন শিক্ষকের ছেলে ক্ষমতার মোহে মাকসুদ নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসিন হল শাখার সহ-সভাপতির পদ বাগিয়ে নেন। তিনি ছাত্রলীগের নেতৃত্বে থাকাকালে মহসিন হলে আধিপত্য বিস্তার করার জন্য তার অধীনে একটি আর্মড গ্রুপ ছিলো। ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময়ে মারামারিতে মাকসুদ অস্ত্র হাতে সবার সামনে থাকতো বলে সেই সময়ে মহসিন হলের বেশ কয়েকজন আবাসিক ছাত্র জানিয়েছেন। মহসিন হলে বহুলালোচিত ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের বন্দুক যুদ্ধে নিহত আবু বকর হত্যাকান্ডে মিশনেও মাকসুদ জড়িত ছিলো বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। 
২০০৯ সালের শুরুর দিকে ছাত্রলীগের প্রতিপক্ষ গ্রুপের  এন্ড্রোয়েড মোবাইল ফোন চুরি করে হাতেনাতে ধরা পড়েন তদানিন্তন কমিটির সহ-সভাপতি হাসানুর রশিদ মাকসুদ। ক্ষিপ্ত মাকসুদের চাপাতির কোপে গুরুতর আহত হয় প্রতিপক্ষ গ্রুপের ছাত্রলীগ ক্যাডার সোহাগ। এ নিয়ে সেসময় বিভিন্ন সংবাদপত্রে খবর প্রকাশিত হয়। 

ব্যক্তিগত জীবনে মাকসুদ কয়েকটি বিয়ে করলেও তার দাম্পত্য জীবন নিয়ে বিস্তর অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

২০১৫ সালের দিকে ঢাকায় প্রথম বিয়ে করে মাকসুদ। মাসখানেক সংসার করার পরে  সেই বউকে ফেলে চলে আসে। পরবর্তীতে সেই বউ যোগাযোগের চেষ্টা করলে মাকসুদ তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে ভয়-ভীতি দেখিয়ে এখন পর্যন্ত দূরে সরিয়ে রেখেছে। পরবর্তীতে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে আপত্তিকর ঘটনার জন্ম দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করে ঝালকাঠিতে। সর্বশেষ বিয়ে করেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে। এভাবে তিনি একটার পর একটা সম্পর্কে জড়াতে থাকেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী জানিয়েছে, মাকসুদের লালসার শিকার হয়ে তারা ঘর-সংসার সবকিছু হারিয়েছেন। মাকসুদের লালসার শিকার হয়ে এভাবে বহু মেয়ের জীবন নষ্ট হয়ে গেছে, অনেকের আবার সংসার ভাঙার উপক্রম হয়েছে। কখনো কখনো নারীদের ব্ল্যাকমেইল করে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা।

মাকসুদের স্বেচ্ছাচারী এবং অস্বাভাবিক জীবনের কারণে শুধুমাত্র বরিশাল শিল্পকলা একাডেমীর মান-সম্মান ক্ষুন্ন হয়নি, বরং অনেক সহজ-সরল নারীর জীবনকেও ধ্বংস করেছেন্য। একাধিক নারীকে অন্তঃসত্ত্বা করে ভয়-ভীতি দেখিয়ে চুপ থাকতে বাধ্য করেছেন। প্রশাসন থেকে শুরু করে  সকলেই যেন অসহায় তার সিন্ডিকেটের কাছে।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রথম শ্রেণীর একটি চাকরি করলেও হাসানুর রশিদ মাকসুদ অহর্নিষি মদ ও জুয়ায় বুদ হয়ে থাকে।  জুয়ার আসরকে কেন্দ্র করেই মাকসুদের সুন্দরী নারী সাপ্লাইয়ের নিষিদ্ধ জগতের রমরমা বাণিজ্য বিস্তার লাভ করতে থাকে। বরিশাল শহরের কেউকেটা ব্যক্তিরাই নন, ঢাকার অনেক মধুকর রাঘব-বোয়ালরাও মাকসুদের ডেরায় এসে হাজির হতেন। এই সুযোগে মাকসুদ জেলা শিল্পকলা অফিসার হয়েও ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পলয়ান অবদি মাকসুদ প্রচন্ড দাপটের সঙ্গে বরিশালের অন্ধকার জগতের মুকুটহীন সম্রাট ছিলেন। 

বরিশাল শিল্পকলা ভবনের নিকটবর্তী এলাকার বাসিন্দারা জানান, মাকসুদ নানা প্রলোভনে শিল্পকলার সুন্দরী নারী শিল্পীদের প্রথমে নিজে ভোগ করতেন। পরবর্তীতে তাদেরকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার বিনিময়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে উপঢৌকন হিসেবে প্রেরণ করতেন। তাকে এই কাজে সহায়তা করেন শিল্পকলার প্রশিক্ষক অনিমেষ সাহা লিটু। 
শিল্পকলার অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের সঙ্গেও মাকসুদের আপত্তিকর ও অসামাজিক সম্পর্ক রয়েছে। যেকারণে অনেক নারীর সংসার ভাঙ্গার উপক্রম হয়েছে। মাকসুদ প্রশাসনের নাকের ডগায় বসেই এ সমস্ত অসামাজিক কার্যকলাপ করে বেড়াতেন। স্থানীয় লোকজন একাধিকবার মাকসুদকে তার অফিস কক্ষে মদ ও নারীসহ হাতেনাতে ধরলেও  সুকৌশলে পালিয়ে যান । নির্ভরযোগ্য কিছু তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে জানা যায় রুপা, মারিয়া সঞ্চি, তিন্নি, উর্মি, মিথিলাসহ বহু নারীকে নিয়ে শিল্পকলায় তার অফিস রুমে রাত কাটান। তিনি বিভিন্ন ব্যক্তিকে নারীসহ শিল্পকলার ডরমেটরি ভাড়া দিতেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

বরিশালের জেলা কালচারাল অফিসার থাকাকালীন সময়ে মাকসুদ শিল্পকলার অডিটরিয়ামের ভাড়ার অর্থের সিংহভাগ আত্মসাৎ করতেন। মাকসুদের জুয়াখেলার মূলধন ছিলো অডিটরিয়মের আয়ের টাকা। 

মাকসুদের মাদরাসা শিক্ষক বাবার নিম্নবিত্ত পরিবার নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে মেহেন্দীগঞ্জ থেকে বরিশাল শহরে জলবায়ু উদ্ধাস্তু হিসেবে আশ্রিত হয়। মাকসুদ শিল্পকলার কালচারাল অফিসার হিসেবে চাকরি পাওয়ায় তার গোটা পারিবার  যেন হাতে আলাদীনের চেরাগ হাতে পায়।

প্রশাসনকে ম্যানেজ করে মাকসুদ তার বড়ভাই নুরুদ্দিন আল মাসুমের নামে বিধি-বহির্ভুতভাবে বরিশালের কালিজিরায় খাসজমি দখলে নিয়েছেন। তার এই বেকার ভাইয়ের নামেই রেজিস্ট্রেশন  করেছেন একটি প্রাইভেট কার। যার নম্বর ঢাকা মেট্রো গ- ১৮-৬৯৫১। 

মাকসুদ তার নিজের নামে ক্রয় করেছেন (ঢাকা মেট্রো গ ১৬-৮৮২৮)। এছাড়াও তার মালিকানাও একাধিক গাড়ি রয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। 

বিকৃত মস্তিষ্ক মাকসুদ তার সহকর্মীদের সঙ্গে একাধিকবার প্রকাশ্যে মারামারি করেছেন। যা মামলা পর্যন্ত গড়িয়েছে। বরিশাল অফিসার্স ক্লাবে তিনি একাধিকবার অন্য অফিসারদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন। কিন্তু কেউই প্রতিবাদ করার সাহস করেনি। সকলেই যেন তার কাছে অসহায়। মোহাম্মদ হাসানুর রশিদ মাকসুদের এই সমস্ত অপকর্মের সাথে জড়িত রয়েছেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির বেশ কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা ও স্টাফ।

মাকসুদের আর্থিক অনিয়ম এবং অস্বচ্ছতার স্বচ্ছ তদন্ত এবং বিভাগীয় অডিট করা হলে তার দুর্ণীতির থলের সবগুলো বিড়াল বের হয়ে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিস্টরা। 

২০২৪ সালের মার্চ মাসে বরিশাল অফিসার্স ক্লাবে জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে বরিশালের তৎকালীন নগর উন্নয়ন অধিদপ্তরের  একজন সহকারী পরিচালক এবং সমাজসেবা অধিদপ্তরের একজন প্রভিশন অফিসারের সঙ্গে মারামারিতে মাকসুদের বাম হাতের কনুই আঙ্গুল ভেঙ্গে যায়। একই বছরের জানুয়ারিতে জুয়ার টাকার ভাগ চাওয়ায় মাকসুদ বানরিপাড়া উপজেলা আইসিটি অফিসার হাফিজ আল আসাদকে মেরে  রক্তাক্ত করে হাসপাতালে পাঠায়। 

এর আগে ২০১৫ সালে ঢাকা শিল্পকলা একাডেমিতে তুচ্ছ কারণে রগচটা মাকসুদের নেতৃত্বে ভয়াবহ মারামরির ঘটনা ঘটে, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা হয়েছিলো। সেই সময় রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে মাকসুদ হাজত থেকে বের হয়ে আসেন। 

জুলাই বিপ্লবের পরে মাকসুদের এসমস্ত অপকর্ম উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসায়  তাকে লালমনিরহাট জেলায় বদলি করা হয়। কিন্তু সেখানেও তিনি নিয়মিত অফিস করেন না। অফিস ফাঁকি দিয়ে বরিশালে এসে তার পূর্বের দোসরদের সাথে মেতে ওঠেন জুয়া ও মদের আড্ডায়। বরিশালের বর্তমান কালচারাল অফিসারকে সরিয়ে দিয়ে তিনি যাতে বরিশালে কিংবা তার পার্শ্ববর্তী কোন জেলায় বদলি হতে পারেন তার জন্য প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন মানসিক বিকারগ্রস্ত মাকসুদ। রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের মিটিংয়ে উপস্থিত না থাকায় গত ৯ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখ  তাকে লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন। লালমনিরহাট জেলায় অসামাজিক কার্যকলাপে সুবিধা করতে পারবে না  বুঝতে পেরে মাকসুদ ইতোমধ্যে লালমনিরহাট থেকে বদলি হওয়ার জন্য উচ্চমহলে দেন-দরবার শুরু করেছেন। 

মাকসুদ প্রায় একবছর আগে লালমনিরহাট বদলি হয়ে গেলেও বরিশাল শিল্পকলার নিয়ন্ত্রণ এখনও পুরোপুরি তার হাতে। জেলা শিল্পকলায় মাকসুদের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে অনিমেষ সাহা লিটু, সুলতানা ইয়াসমিনসহ একটি সংঘবদ্ধ দুর্নীতিবাজ চক্র। 


জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক  সংগঠন (জাসাস) এর বরিশাল দক্ষিণের আহবায়ক এস এম সাব্বির নেওয়াজ সাগর এ প্রতিবেদককে বলেন, বরিশাল শিল্পকলার দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে কালচারাল অফিসার হাসানুর রশিদ শুধু শিল্পকলা নয়, বরিশালের শিল্প-সাংস্কৃতিক অঙ্গণের পরিবশেকে নোংরা করে ফেলেছিলো। হেন কাজ নেই, যা তিনি বরিশাল শিল্পকলা একাডেমির চেয়ারে বসে করেন  নি। হাসানুর রশীদ লালমনিরহাটে চলে গেলেও তার দোষরগণ এখনও বরিশাল শিল্পকলায় বহাল তবিয়য়তে রয়েছে। শুনেছি, তারা ফ্যাসিস্ট সরকারের দোষর হাসানুর রশিদকে আবার বরিশালে ফিরিয়ে আনার চেস্টা-তদ্বির শুরু করেছে। 

এ ব্যাপারে লালমনিরহাট জেলা শিল্পকলা কর্মকর্তা ও অভিযুক্ত মোহাম্মাদ হাসানুর রশিদ (মাকসুদ) এর অফিশিয়াল ফোন নাম্বারে (01711963227) একাধিকবার চেস্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। 

বরিশালের সংস্কৃতিমনা মানুষদের মনে কোটি টাকার প্রশ্ন, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের অস্ত্রধারী ক্যাডার হাসানুর রশীদ মাকসুদের কাছে কি শিল্পকলা একাডেমীসহ সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ও অসহায় ও জিম্মি হয়ে থাকবে? বরিশালের সাংস্কৃতিক ও শিল্পাঙ্গণ তছনছ করেও কোন শক্তির বলে দুর্ণীতিবাজ মাকসুদ পার পেয়ে যাবে? তবে এখনও সর্ষের ভেতর স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্টের দোসরদের ভূত লুকিয়ে আছে?