
২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা জারি করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি)। নীতিমালা অনুযায়ী, এবারও তিন ধাপে নেওয়া হবে ভর্তি আবেদন। প্রথম ধাপে অনলাইনে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে ৩০ জুলাই থেকে। যা চলবে ১১ আগস্ট পর্যন্ত।প্রথম ধাপের ফল প্রকাশ করা হবে ২০ আগস্ট রাত ৮টায়। এরপর আরো দুই ধাপে আবেদন গ্রহণ, ফল প্রকাশ, নিশ্চায়ন ও চূড়ান্ত ভর্তি শেষে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস শুরু করা হবে। আজ বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সরকারি কলেজ-১ শাখার উপসচিব মো. আব্দুল কুদদুস স্বাক্ষরিত এক নীতিমালায় এ তথ্য জানানো হয়।
নীতিমালা অনুযায়ী ভর্তির যোগ্যতা ও বিভাগ নির্বাচন :
যেকোনো শিক্ষাবর্ষে এসএসসি/সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের সাল এবং ধারাবাহিকভাবে পূর্ববর্তী দুই সালে দেশের যেকোনো শিক্ষা বোর্ড এবং বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীগণ নীতিমালার অন্য বিধানাবলি সাপেক্ষে কোনো কলেজ/সমমানের প্রতিষ্ঠানে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনে ভর্তির যোগ্য বিবেচিত হবে।বিদেশি কোনো বোর্ড বা অনুরূপ কোনো প্রতিষ্ঠান হতে সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীগণ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা কর্তৃক তার সনদের মান নির্ধারণের পর উপনীতি-২.১-এর অধীনে ভর্তির যোগ্য বিবেচিত হবে।
ভর্তির আবেদনে একজন প্রার্থী নিম্নরূপ বিভাগ নির্বাচন করতে পারবে :
১. বিজ্ঞান বিভাগ হতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ এর যেকোনোটি;
২. মানবিক বিভাগ হতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের যেকোনোটি এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ হতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগ এর যেকোনেটি;
৩. যেকোনো বিভাগ (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা) থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী ইসলামী শিক্ষা, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ও সংগীত বিভাগের যেকোনোটি;
৪. বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে বিজ্ঞান বিভাগে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের যেকোনোটি এবং সাধারণ ও মুজাব্বিদ মাহির বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী বিজ্ঞান বিভাগ ব্যতীত যেকোনোটি;
৫. বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীগণ সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের যেকোনো বিভাগে ভর্তির আবেদন করতে পারবে।প্রার্থী নির্বাচনে অনুসরণীয় পদ্ধতি :
ভর্তির জন্য কোনো বাছাই বা ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে না। কেবল শিক্ষার্থীর এসএসসি বা সমমান পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ভর্তি করা হবে।কলেজ/সমমানের প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কলেজ/সমমানের প্রতিষ্ঠানের ৯৩ শতাংশ আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে, যা মেধার ভিত্তিতে নির্বাচন করা হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১ শতাংশ এবং কর্মরত অধীনস্থ দপ্তর/সংস্থায় কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সন্তানদের ক্ষেত্রে ১ শতাংশসহ মোট ২ শতাংশ আসন মহানগর, বিভাগীয় ও জেলা সদরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য ন্যূনতম যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে সংরক্ষিত থাকবে। যদি আবেদনকারীর সংখ্যা বেশি হয় সে ক্ষেত্রে তাদের নিজেদের মধ্যে মেধার ভিত্তিতে ভর্তির সুযোগ পাবে।
আবেদনের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারী কর্তৃক দপ্তর প্রধানের প্রত্যয়নপত্র দাখিল করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা নিজস্ব দপ্তরের প্রধান হলে সে ক্ষেত্রে তার এক ধাপ ওপরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার প্রত্যয়নপত্র দাখিল করতে হবে।মুক্তিযোদ্ধা/শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যার ভর্তির জন্য ৫% আসন সংরক্ষিত থাকবে। মুক্তিযোদ্ধা/শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যাদের আসন নির্ধারণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রমাণপত্র/গেজেটের সত্যায়িত কপি আবেদপত্রের সাথে সংযুক্ত করতে হবে এবং ভর্তির সময় মূল কপি প্রদর্শন করতে হবে।
এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় হতে ইস্যুকৃত মুক্তিযোদ্ধা সনদ যথাযথভাবে যাচাই করে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। মুক্তিযোদ্ধা/শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা পাওয়া না গেলে মেধা তালিকা থেকে উক্ত আসনে ভর্তি করতে হবে। কোন অবস্থায় আসন শূন্য রাখা যাবে না।
অনলাইনে ভর্তি :
শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। ভর্তি সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম অনলাইন প্লাটফর্মে সম্পন্ন করা হবে। ভর্তির ফি বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি নির্ধারণ করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অনুমোদন গ্রহণপূর্বক প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করবে।
বিজ্ঞপ্তি, ভর্তি ও ফি :
কলেজ/সমমানের প্রতিষ্ঠান বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত আসন সংখ্যা (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ, শিষ্ট,পুরুষ/মহিলা/সহশিক্ষা,ভার্সন) এবং বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত ভর্তি ফিসহ অনুমোদিত অন্যান্য সকল ফি, ভর্তির ন্যূনতম যোগ্যতা ইত্যাদি তথ্য ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠানের নোটিশ বোর্ড এবং ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে। বোর্ডে নির্ধারিত আসন সংখ্যার অতিরিক্ত কিংবা পাঠদানের অনুমতি নেই এমন কোন বিষয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে না। বোর্ডসমূহ স্ব স্ব অধিক্ষেত্রে অবস্থিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই বিধান বাস্তবায়নে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
অনলাইনে বোর্ড থেকে প্রাপ্ত ভর্তিযোগ্য প্রার্থীদের মেধাক্রম তালিকা সংশ্লিষ্ট কলেজ নোটিশ বোর্ড ও ওয়েবসাইটে প্রকাশের ব্যবস্থা করবে।