ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) অজিত দোভাল বলেছেন, বাংলাদেশ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কাসহ দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে সরকার পতনের অন্যতম কারণ হলো দুর্বল শাসনব্যবস্থা। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) জাতীয় একতা দিবস উপলক্ষে এক বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন।অজিত দোভাল বলেন, “জাতি গঠনে ও জাতিকে সুরক্ষিত রাখতে, তার লক্ষ্য অর্জনে এবং সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণে প্রশাসনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” তিনি মনে করেন, শাসনব্যবস্থার ক্ষেত্রে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো জনগণকে সন্তুষ্ট রাখার ক্রমবর্ধমান প্রয়োজনীয়তা। তার ভাষায়, “বর্তমান যুগে সাধারণ মানুষ আরও সচেতন ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী হয়ে উঠেছে। রাষ্ট্রের কাছ থেকে তাদের প্রত্যাশাও বেড়েছে, তাই রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে নাগরিকদের সন্তুষ্টির দিকেও নজর দেওয়া।”
দুর্বল প্রশাসনিক কাঠামোকে সরকার পরিবর্তনের অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপালসহ কয়েকটি দেশে অসাংবিধানিক উপায়ে শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের ঘটনা ঘটেছে। এসব উদাহরণই প্রমাণ করে, একটি রাষ্ট্রের শক্তি তার প্রশাসনিক দক্ষতার ওপর নির্ভর করে।”
তিনি আরও বলেন, “একটি জাতির শক্তি নিহিত থাকে তার শাসনব্যবস্থার মধ্যেই। যারা রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো তৈরি ও লালন করেন, তারাই আসলে জাতি গঠনের মূল চালিকাশক্তি।”
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শাসন মডেলের প্রশংসা করে দোভাল বলেন, “ভারত এখন একটি নির্দিষ্ট ধরণের শাসন ও সামাজিক কাঠামো থেকে বেরিয়ে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করছে।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “পরিবর্তনের সময় লক্ষ্য পরিষ্কার রাখা সবচেয়ে জরুরি। ঝড়-ঝাপটার মধ্যেও যেন ভয় বা বিভ্রান্তিতে পড়ে পথ হারানো না হয়।”
ভালো শাসনের মূল উপাদান হিসেবে নারীর সুরক্ষা, সমতা ও ক্ষমতায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে অজিত দোভাল বলেন, “নারীর ক্ষমতায়ন আধুনিক প্রশাসনের অপরিহার্য অংশ। শুধু ভালো আইন করলেই হবে না, সেগুলোর কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।”
প্রযুক্তির ব্যবহারের ওপরও গুরুত্ব দেন তিনি। তার মতে, “শাসনে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রযুক্তি অপরিহার্য। তবে একই সঙ্গে প্রযুক্তিনির্ভর হুমকি—বিশেষ করে সাইবার আক্রমণ—থেকে সমাজকে সুরক্ষিত রাখাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।”
সূত্র: এনডিটিভি