ঢাকা, শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫,
সময়: ০৮:৩২:০৬ AM

নিঃশব্দ ছায়া

মান্নান মারুফ
05-12-2025 09:53:16 PM
নিঃশব্দ ছায়া

পর্ব–৪**

কলি হাঁটতে হাঁটতে অবশেষে হলে পৌঁছে গেল। ক্লান্ত শরীরটাকে একটু বিশ্রাম দিতে চাইছিল সে। দীর্ঘ একদিনের ভেতরকার জটিলতা, চাপা অভিমান আর অস্বস্তি সব মিলিয়ে মনে হচ্ছিল যেন নিজের ভেতরই কোথাও হারিয়ে যাচ্ছে। হলে ঢুকতেই সবার আগে নিজের ব্যক্তিগত কাজগুলো সারতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল সে। নিজের কাজের ভিড়ে সাময়িকভাবে হলেও নীলের প্রতি অভিমানটা যেন কিছুটা চাপা পড়ে গেল। তবুও বুকের এক কোণে রয়ে গেল একটা না-বলা প্রশ্ন—সবকিছু কি আর আগের মতো হবে?

অন্যদিকে নীল কলিকে হলে ঢুকতে দেখেও আর ভেতরে যায়নি। দরজার কাছে দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ চুপচাপ তাকিয়ে রইল। যেন ক্লান্ত একটা মানুষের দৃষ্টিতে নিজের ত্রুটিগুলোকে খুঁটিয়ে দেখছিল সে। কলি হয়তো ভাবছে সে পরিবর্তন হয়েছে, দূরে সরে গেছে, কিন্তু নীল সত্যিই বুঝতে পারছিল না—নিজের ওপর থেকে ভরসা কীভাবে ফিরিয়ে আনবে?

গত কয়েকদিন ধরে সে অনুভব করছে নিজের ভেতরের ভারসাম্যটা অদ্ভুতভাবে নড়ে গেছে। কলিকে ভালোবাসে—এটা সে জানে। আবার সুমার সান্নিধ্য তাকে যে অদ্ভুত একটা শান্তি দেয়, সেটাও সে অস্বীকার করতে পারছে না। ধীরে ধীরে যেন সুমার প্রতি এক ধরনের টান তৈরি হচ্ছে। আর এই টানই তাকে অসংখ্য প্রশ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।

হলের সামনে দাঁড়িয়ে নীল নিজের মনকে প্রশ্ন করল, “আমি কি কলিকে সত্যিই ভুলে যাচ্ছি? নাকি এই অস্বস্তি কেবলই সময়ের খেলা?”
কোনো উত্তর সে পেল না। মাথার ভেতর একই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে—বিশ্বাস কি আবার ফিরে আসবে? কিন্তু সেই প্রশ্নের উত্তরও যেন তার কাছে অধরা হয়ে ছিল।

অবশেষে নীরবতা ভেঙে নীল ধীরে ধীরে হাঁটা দিল নিজের হলে ফেরার পথে। রাতের বাতাসে এক অদ্ভুত শীতলতা ছিল। সেই শীতলতা তার ভেতরের অস্থিরতাকেও যেন আরও তীব্র করে তুলছিল। বড় রাস্তা পেরিয়ে হলে পৌঁছানোর সময় তার চোখে স্পষ্ট ক্লান্তির ছাপ। মনটা কোথাও আটকে আছে—কলির কাছে, না সুমার কাছে—সে নিজেও জানে না।

নীল, কলি এবং সুমা—তিনজনই একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তাদের বন্ধুত্বের শুরু অনেক আগের। প্রথম বর্ষেই নীল ও কলির পরিচয় থেকে সম্পর্ক, আর সেই সম্পর্কই আজ এত জটিলতা তৈরি করেছে। সুমা ছিল কলির এক বছরের জুনিয়র, এক সহজ-সরল, হাসিখুশি মেয়ে। কিন্তু গত কয়েক মাসে সুমা আর নীলের পরিচয়টা একটু বেশি ঘনিষ্ঠ হয়ে গেছে। অনিচ্ছা সত্ত্বেও নীল বুঝতে পারছে—সুমা তার জীবনে একটি আলাদা জায়গা তৈরি করছে। আর ঠিক এই জায়গাটাই কলির সঙ্গে সম্পর্ককে অনিশ্চয়তায় ঠেলে দিচ্ছে।

হলে ফিরে নীল বিছানায় বসতেই অনুভব করল—তার মন যেন দু’ভাগে ছিঁড়ে যাচ্ছে। কলির প্রতি দীর্ঘদিনের ভালোবাসা আর সুমার প্রতি নতুন বিষ্ময়ময় আকর্ষণ—দুটোই তাকে চাপ দিচ্ছে দুই দিক থেকে। সে বুঝতে পারছে না, কোনটা পথ, কোনটা ভুল। এ সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় কি এসেছে? নাকি পরিস্থিতি নিজেই তাকে একটা দিকে ঠেলে দেবে?

এদিকে কলি নিজের রুমে বসে বারবার ভাবছিল—আজ নীলকে যেন অস্বাভাবিক লাগছিল। চোখে একটা দূরত্ব, কথায় একটা শীতলতা। কলি অনুভব করছে, নীলের ব্যস্ততা আর অমনোযোগ তার সম্পর্কের ভরসাকে নষ্ট করে দিচ্ছে। কিন্তু কলি এখনো বিশ্বাস করতে চায়—নীল বদলে যায়নি। সেই মানুষটা এখনও তারই।

রাত বাড়তে থাকল। দুই হলে দুই মন—দুজনেরই অস্থিরতা যেন একই সুরে বাঁধা। কেবল সুরের দিকটা ভিন্ন। নীরব শহর, নিঃশব্দ রাত, আর তিনটি জীবনের জটিল ছায়া—সব মিলিয়ে যেন ভবিষ্যৎকে আরও অনিশ্চিত করে তুলছিল।

অজান্তেই তারা সবাই ক্রমশ এক অদ্ভুত, অদৃশ্য ছায়ার দিকে হাঁটছে—যেখান থেকে শুরু হবে পরবর্তী সংঘাত, পরবর্তী প্রশ্ন, আর হয়তো কিছু সত্যের মুখোমুখি দাঁড়ানো।

 

**নিঃশব্দ ছায়া 

পর্ব–৫**

রাত তখন গভীর। হলে সবার আলো নিভে এলে পুরো ক্যাম্পাসটা যেন এক অদ্ভুত নীরবতায় ডুবে যায়। কিন্তু এই নীরবতার ভেতরেও নীলের ঘুম আসছিল না। বারবার ফোনটা হাতে নিচ্ছিল, আবার রাখছিল। কলিকে কি মেসেজ দেবে? নাকি একটু সময় দেবে? কোনো সিদ্ধান্তেই পৌঁছাতে পারছিল না।

অবশেষে সে জানালার পর্দা সরিয়ে বাইরে তাকাল। আকাশে পাতলা চাঁদের আলো। নিচে রাস্তার ল্যাম্পপোস্টের নিচে রাতের প্রহরী হাঁটছে ধীরে ধীরে। সেই দৃশ্যটাও আজ তার ভেতরের অস্থিরতাকে কমাতে পারল না।

হঠাৎ দরজায় টোকা।
নীল চমকে উঠে দরজা খুলতেই দেখল—সুমা দাঁড়িয়ে আছে। শালটা গলায় পেঁচানো, মুখে চিন্তার ছাপ।

“এই সময় এখানে?... সব ঠিক আছে?”
নীল বিস্মিত স্বরে জিজ্ঞেস করল।

সুমা একটু দ্বিধায় পড়ল, তারপর আস্তে বলল,
“আপু আজকে খুব মনমরা মনে হলো। তোমরা কি ঝগড়া করেছ?”

কলির নাম শুনতেই নীলের বুকটা হালকা কেঁপে উঠল।
“ঝগড়া নয়… কিছু ভুল বোঝাবুঝি। সময় লাগবে ঠিক হতে।”

সুমা ঘরে ঢুকল না, দরজার সামনে দাঁড়িয়েই বলল,
“তুমি যদি মন চাও ঠিক করতে, আপুর কাছে যাও। ওর চোখে আজ কেমন একটা শূন্যতা দেখেছি। মনে হলো… সে বেশ কষ্টে আছে।”

নীল কিছুক্ষণ থম মেরে দাঁড়িয়ে রইল। সুমার কণ্ঠে আজ অদ্ভুত এক পরিপক্বতা, এমনকি দূরত্বও টের পেল সে। যেন সুমা বুঝতে পারছে—নীলের ভেতরে যে টানাপোড়েন চলছে, সেটা সবাইকে আঘাত করতে পারে।

“তুমি এত চিন্তা করো না।” — নীল বলল।
সুমা হালকা হাসল, কিন্তু সেই হাসির ভেতরে ছিল অস্পষ্ট একটা ব্যথা।

“নিজেকে আর অন্য কাউকে কষ্ট দিও না, নীল ভাই। নিজের সত্যিটা আগে খুঁজে দেখো।”

কথা শেষ করে সুমা দ্রুত নিচে নেমে গেল।
নীল দরজায় দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে বুঝল—সুমা ঠিকই বলেছে। সে যদি নিজের মনই না বোঝে, তবে কলিকে কী ব্যাখ্যা দেবে?


অন্যদিকে কলি তখনো ঘুমাতে পারেনি। বিছানায় শুয়ে ছাদ দেখছিল। তার মনে হচ্ছিল যেন কিছু একটা ভেঙে যাচ্ছে। নীলের সঙ্গে তার সম্পর্কটা শুধু প্রেম নয়, ছিল বন্ধুত্ব, বোঝাপড়া, গভীর নির্ভরতা। কিন্তু ইদানিং নীলের আচরণ—অস্থিরতা, মনোযোগহীনতা—সবই কলির মনকে ভারী করে তুলেছে।

হঠাৎ রুমের দরজা খুলে রুমমেট তৃষা ঢুকল।
“আজ কী হয়েছে বলো তো? তোমাকে বেশ অদ্ভুত লাগছে।”

কলি একটু হাসল, কিন্তু সেই হাসি ছিল নিস্তেজ।
“কিছু না। মাথা ধরেছে।”

তৃষা পাশে বসে বলল,
“দেখো কলি, সম্পর্কের সমস্যার কথা যদি বলতে ইচ্ছা করে, বলো। কাউকে বললে মনটা হালকা হয়।”

কলির চোখ হঠাৎ ভিজে উঠল।
“তৃষা… মনে হয় নীল আমাকে নিয়ে আর আগের মতো ভাবছে না। আমি বুঝতে পারছি না কোথায় ভুল হলো।”

তৃষা কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল,
“মানুষের মন কখনো কখনো বদলে যায়। আবার কখনো তা কেবলই ভুল সময়ের ভুল প্রতিক্রিয়া হয়। আগে নীলের সঙ্গে ঠিকমতো কথা বলো। কথায় সবসময়ের সমাধান হয়।”

কলির চোখ ভিজে আসা সত্ত্বেও মাথা নত করে সম্মতির সুরে বলল,
“হয়তো ঠিকই বলছ…”


রাত তিনটা বাজে। অদ্ভুতভাবে একই সময়ে নীল আর কলি—দু'জনেই সিদ্ধান্ত নিল, সকাল হলে কথা বলবে। ভুল বোঝাবুঝির জায়গাটা খুঁজে বের করা দরকার। তাদের সম্পর্ক এখন একটা মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে—একটা ভুল পদক্ষেপেই সবকিছু ভেঙে পড়তে পারে।

কিন্তু তারা কেউই জানত না—পরের দিন সকালে যা ঘটবে, তা তাদের তিনজনের জীবনই বদলে দেবে।


ভোরের আলো ফোটার আগেই সুমা উঠে পড়ল। তার মনে হচ্ছিল আজকের দিনটা আলাদা হবে। কেন জানে না… কিন্তু বুকের গভীরে অদ্ভুত একটা আশঙ্কা।

ক্যাম্পাসের এক কোণে তখন অচেনা এক ছায়া ঘুরে বেড়াচ্ছিল—যেন নীরবে অপেক্ষা করছে সঠিক মুহূর্তের।

নিঃশব্দ ছায়ার খেলাটা মাত্রই শুরু হয়েছে…

 

**নিঃশব্দ ছায়া 

পর্ব–৬**

কলি ইদানিং পড়াশোনায় একেবারেই মনোযোগ দিতে পারছিল না। ক্লাসে বসে বই খুললে অক্ষরগুলো যেন তার চোখের সামনে নেচে বেড়াত, কিন্তু মাথায় কিছুই ঢুকত না। দিন দিন সে আরও চুপচাপ হয়ে যাচ্ছিল। রুমমেট তৃষা খেয়াল করলেও কলি কিছু বলতে চাইত না। কারও সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে হতো না। যেন এক গভীর অজানা অন্ধকার তাকে গ্রাস করে ফেলেছে।

কলি নিজের ভেতরে শুধু একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল—
সম্পর্কটা কি সত্যিই শেষের দিকে?
দীর্ঘদিনের ভালোবাসা, বিশ্বাস আর স্মৃতি—সব কি এভাবেই ফিকে হয়ে যাবে?

নীলের বদলে যাওয়া আচরণ তাকে ধীরে ধীরে ভেঙে দিচ্ছিল। কথা বলা কমে গেছে, মেসেজের উত্তরও দেরিতে আসে, আর গত কয়েকদিন ধরে নীল কলির কোনো ফোনই ধরছে না। কলি বারবার ফোন দিয়েছে, কিন্তু প্রতিবার একই ফল—ফোন বেজে যায়, কেউ ধরছে না।

এই অনিশ্চয়তার মাঝেই একদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে হলগুলোতে বড় ধরনের মারামারি বাঁধল। খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ল। পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠল। নিরাপত্তাহীনতা টের পেল সকলেই। অনেকে হলে ফিরতে ভয় পেল। পরিস্থিতি দেখে কলিও সিদ্ধান্ত নিল—কিছুদিনের জন্য বাড়ি গিয়ে থাকাই ভালো।

ব্যাগ গোছাতে গোছাতে সে আবারও নীলকে ফোন করল।
রিং বাজল, বাজল… তারপর নিঃশব্দ।
নীল ধরল না।

এবার কলির বুকের ভেতরটা আরও ভারী হয়ে গেল।
সে কি ইচ্ছে করেই এড়িয়ে যাচ্ছে?

বাড়ি যাওয়ার আগে নীল কোথায় আছে, কী করছে—সেটা জানার একটা ইচ্ছা তার মনে পরিষ্কার হচ্ছিল। কিন্তু সুমার কাছে গিয়ে খোঁজ নেওয়ার সাহস পাচ্ছিল না। সুমার সাথে নীলের ঘনিষ্ঠতা কি সত্যিই বেড়ে গেছে? নাকি সবই তার মনের ভুল?

শেষ মুহূর্তে দরজায় কড়া নেড়ে তৃষা ঢুকল।
“এই, হঠাৎ বাড়ি যাচ্ছিস?”
কলি মাথা নাড়ল।
“মারা-মারি, ঝামেলার মধ্যে থাকবো না। একটু সময় নিয়ে ভাববো।”

তৃষা ব্যাগটি দেখে বলল,
“দেখ, বাড়ি যা সমস্যা নেই… কিন্তু এক কথা বলি—তুই বান্দরবন যাসনে।”

কলি চমকে উঠল।
“বান্দরবন? কেন?”

তৃষা কিছুক্ষণ থামল। মুখে দ্বিধা।
“তুই জানিস না?”

কলি বিভ্রান্ত চোখে তাকাল।
তৃষা গলা নামিয়ে বলল,
“নীল… ও আর ওর কয়েকজন বন্ধু… সবাই গেছে বান্দরবন। ঘুরতে। আর…”

কলির বুকের ভেতর হঠাৎ ধাক্কার মতো একটা কাঁপন উঠল।
“আর কী?”

তৃষা আস্তে বলল,
“সুমাও গেছে ওদের সঙ্গে।”

মুহূর্তেই কলির মাথার ওপর যেন আকাশ ভেঙে পড়ল।
সব শব্দ যেন থেমে গেল।
হলের ছোট ঘরটা চারদিক থেকে তাকে চেপে ধরতে লাগল।

“একসাথে? নীল… আর সুমা? কোনো কথা না বলে?”
তার গলা শুকিয়ে গেল। হাত কাঁপতে লাগল।

তৃষা তাড়াতাড়ি বলল,
“দেখ, আমি জানি না কারা কীভাবে গেল। হয়তো এটা খুব সাধারণ একটা ট্যুর। কিন্তু তোর কাছে না বলে যাওয়াটা—হুম… ব্যাপারটা ঠিক হয়নি।”

কিন্তু কলির কানে “ঠিক হয়নি” কথাটা আর পৌঁছাল না।
তার মাথায় ঘুরতে লাগল শুধু একটা চিত্র—নীল আর সুমা পাহাড়ের পথে হাঁটছে, গল্প করছে, হাসছে… আর সে? এখানে বসে কাঁদছে।

অবিশ্বাস, অপমান, কষ্ট—সব একসাথে ভিড় করে এলো।
মনে হলো কেউ তার বুক ছিঁড়ে কষ্ট ঢেলে দিয়েছে।

কলি বিছানায় বসে পড়ল।
“তাহলে… এ কারণেই আমার ফোন ধরছিল না?”
“কলি, এমন ভাবছিস না। সবই অনুমান। আগে নীলের সঙ্গে কথা—”
তৃষা কথা শেষ করার আগেই কলি উঠে দাঁড়াল।
চোখে এক ধরনের ভাঙা, শূন্য দৃষ্টি।

“কিছুই বলার নেই। যা দেখছি, যা পাচ্ছি… সবই বলে দিচ্ছে আমার জায়গা বদলে যাচ্ছে।”

ব্যাগ কাঁধে তুলে নিল সে।
আরেকবার নীলকে ফোন দিল।
স্ক্রিনে ভেসে উঠল—Ringing…
তারপর—Call Ended.

কলির বুক ভেঙে গেল।
এভাবে কেউ কি ভালোবাসার মানুষকে ছেড়ে দেয়?
নাকি নীলের মনে সত্যিই জায়গা বদলে গেছে?

হল থেকে বের হওয়ার সময় কলি অনুভব করল—এ বিশ্ববিদ্যালয়, এই করিডোর, এই স্মৃতিগুলো এখন তার কাছে কেবলই ব্যথার প্রতীক। বাইরে ভ্যান ডাকছে, বাতাসে সন্ধ্যার শীত।

কিন্তু কলির হৃদয়ের ভেতর তখন শুধু একটাই প্রশ্ন—
নীল কি তার জন্য হারিয়ে যাচ্ছে? নাকি সে আগেই হারিয়ে গেছে?

তবে কলি জানত না—নীলও এখন এমন এক সমস্যার ভেতর পড়ে আছে, যার কথা কেউ জানে না।
আর বান্দরবনের সেই সফর—এটাই খুলে দেবে পরবর্তী রহস্যের দরজা।

নিঃশব্দ ছায়া এখন আরও গভীর হতে শুরু করেছে…