ঢাকা, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫,
সময়: ০১:৪৩:৩১ AM

ধর্মের দোহাই দিয়ে ফায়দা লুটতে চায় কিছু দল:রিজভী

স্টাফ রিপোটার।। দৈনিক সমবাংলা
14-10-2025 07:56:43 PM
ধর্মের দোহাই দিয়ে ফায়দা লুটতে চায় কিছু দল:রিজভী

ভোট দিলে বেহেশতে যাওয়া যাবে—এমন প্রচারণাকে জনগণের সঙ্গে ধর্ম নিয়ে প্রতারণা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, “আমাদের সমাজকে কিছু ভ্রান্ত মানুষ ইসলামের নাম করে বিপথে পরিচালিত করতে চাইছে। ধর্মীয় মূল্যবোধকে বিকৃত করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতেই এসব বলা হচ্ছে।” মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। রিজভী বলেন, “জামায়াতে ইসলামী কি মধ্যযুগীয় খ্রিষ্টান পাদরিদের মতো জান্নাতের টিকিট বিক্রি করছে? তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলছে, দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিলে বেহেশতে যাওয়া যাবে—এটা সম্পূর্ণ ধর্মীয় প্রতারণা।” তিনি আরও বলেন, “এটি ইসলামের মৌলিক নীতির বাইরে। ইসলাম কোনোভাবেই এমন ভণ্ডামিকে সমর্থন করে না। রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য এভাবে ধর্মকে ব্যবহার করা অত্যন্ত বিপজ্জনক।” বিএনপির এই মুখপাত্র অভিযোগ করেন, জামায়াত ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালাচ্ছে। “তারা কিছু ছেলেপেলেকে দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যাচার, কটূক্তি ও কুরুচিপূর্ণ কথা ছড়ানোর বাহিনী গড়ে তুলেছে। এরা মিথ্যাকে সাজিয়ে গুছিয়ে প্রচার করছে প্রতিনিয়ত।” রিজভী বলেন, “যারা নভেম্বরে গণভোটের কথা বলছেন, তাদের একটি মাস্টারপ্ল্যান আছে। তারা শর্ত দিয়ে বিভ্রান্ত করছে, উদ্দেশ্য জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করা।” তিনি বলেন, “জামায়াত এখনো আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় থাকতে চায়। তাদের রাজনৈতিক চাতুর্য দেখেই বোঝা যায়, তারা কৌশলে আওয়ামী লীগের ভোট টানার পাঁয়তারা করছে। একদিকে পিআর (প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন), সংস্কার, গণভোট—এসব দিয়ে বিতর্ক তৈরি করছে, অন্যদিকে ধর্মীয় আবেগে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।” রিজভী বলেন, “বাংলাদেশে নতুন কোনো ইসলামিক ধারার নাম করে বিভ্রান্তিকর মতাদর্শ ছড়ানোর চেষ্টা চলছে। এটিকে ‘মওদুদীবাদ’ বলে চিহ্নিত করা যায়। বাংলাদেশের মানুষ এটা কোনোদিনই গ্রহণ করবে না। আমাদের ঈমান, আকিদা ও তাওহীদে বিশ্বাসের জায়গায় এই ধরনের মতাদর্শের কোনো স্থান নেই।” তিনি বলেন, “৭১ সালের যারা ভয়াবহ ঘটনা ঘটিয়েছিল, তারাও তো মুসলমান ছিল। কিন্তু একজন মুসলমান আরেকজন মুসলমানের উপর কীভাবে এমন অত্যাচার করতে পারে? যারা এসব অপরাধের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে বা করছে, তারা কি ভালো মানুষ? নিজেদের অতীত ভুলে গিয়ে এখন ধর্মের দোহাই দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো আর ক্ষমতার জন্য যেকোনো পথ নেওয়া ইসলাম সমর্থন করে না।” রিজভী বলেন, “জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বিচার ও শাস্তির বিষয়ে তারা নীরব থেকেছে। এখন তারা অন্য রাজনৈতিক দলের বিরুৃদ্ধে কুৎসা রটিয়ে নিজেদের অবস্থান তৈরি করতে চায়। কিন্তু সাধারণ মানুষ এসব বুঝে গেছে।” সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ মাওলানা মো. আলমগীর হোসাইন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, সহধর্মবিষয়ক সম্পাদক এ টি এম আবদুল বারী ড্যানী এবং নির্বাহী কমিটির সদস্য মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক প্রমুখ।