ঢাকা, শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫,
সময়: ০৯:১৯:৩৩ PM

ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হতে হবে: মির্জা ফখরুল

ষ্টাফ রিপোটার।। দৈনিক সমবাংলা
07-11-2025 07:33:54 PM
ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হতে হবে: মির্জা ফখরুল

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “খুব স্পষ্টভাবে বলতে চাই—নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হতে হবে এবং সেই নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই করতে হবে। অন্যথায় বাংলাদেশের মানুষ কোনোভাবেই তা মেনে নেবে না।” শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে র‍্যালির পূর্বে এ সংক্ষিপ্ত সমাবেশের আয়োজন করা হয়। বিকেল ৩টা ৩৫ মিনিটে শুরু হয়ে প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে এ সমাবেশ চলে। সমাবেশ শেষে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নয়াপল্টন থেকে র‍্যালি শুরু হয়ে সোনারগাঁও হোটেলের সামনে সার্ক ফোয়ারা পর্যন্ত গিয়ে শেষ হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আধুনিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা। তিনি সংস্কারের জন্য ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন। যদি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেই সংস্কার বাস্তবায়ন শুরু করে, তাহলে বিএনপি তাদের পূর্ণ সমর্থন জানাবে। এক বছর ধরে তারা সংস্কারের রূপরেখা তৈরির কাজ করেছে। গত ১৭ অক্টোবর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে, যাতে বিএনপিও স্বাক্ষর করেছে।

তবে তিনি অভিযোগ করে বলেন, “হঠাৎ এক উপদেষ্টা প্রেস কনফারেন্স করে ঘোষণা দিলেন—রাজনৈতিক দলগুলোকে সাত দিন সময় দেওয়া হবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। তাহলে এতদিন ধরে যে ঐকমত্যের কাজ হলো, সেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত কোথায় গেল? এত টাকা ব্যয় করে কাজ হলো, কিন্তু কোনো সমস্যার সমাধান হলো না।”

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, “একটি রাজনৈতিক দল জোট বেঁধে চাপ সৃষ্টি করছে যে নির্বাচনের আগেই গণভোট হতে হবে। কিন্তু আমরা বলেছি—গণভোট নির্বাচনের দিনই হতে হবে। দুটি ভোট আলাদা দিনে হলে অপ্রয়োজনীয় খরচ বাড়বে এবং মূল নির্বাচনের গুরুত্ব হারাবে। অথচ অন্তর্বর্তী সরকার এমন সব পদক্ষেপ নিচ্ছে, যা নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।”

তিনি বলেন, “আমরা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব এবং ইনশাআল্লাহ বিজয়ী হয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব।”

যুবসমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “আপনারা যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন—আমাদের হাজারো নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন—তাদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সামনে এগিয়ে যান এবং বিজয় নিশ্চিত করুন।”

সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, “বিএনপি মাঠে নামলে আপনাদের কাউকে খুঁজেও পাওয়া যাবে না। ১৯৭১ সালে যেমন জাতিকে বিভ্রান্ত করেছিলেন, এখনো তাই করছেন। সময় থাকতে জাতির কাছে ক্ষমা চান।”

র‍্যালিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন—ড. আবদুল মঈন খান, আব্দুস সালাম, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আসাদুল করিম শাহিন, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, এস এম জিলানী, আব্দুল মোনায়েম মুন্না, হেলাল খান, হাসান জাফির তুহিন, সানজিদা ইসলাম তুলি, রাকিবুল ইসলাম রাকিব প্রমুখ।

বিভিন্ন ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, সাজানো ট্রাক ও গাড়ি নিয়ে নেতাকর্মীরা র‍্যালিতে অংশ নেন। পুরো এলাকাজুড়ে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ।