ঢাকা, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫,
সময়: ১১:৫৬:২০ PM

হরমুজ প্রণালী বন্ধ হলে বিপদে পড়বে বিশ্ব

ডেস্ক রিপোটার।। দৈনিক সমবাংলা
15-06-2025 03:25:46 PM
হরমুজ প্রণালী বন্ধ হলে বিপদে পড়বে বিশ্ব

পারস্য উপসাগরে আবারও উত্তেজনা। ইরান এবার হুমকি দিয়েছে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করার। অনেকেই এখন একটাই প্রশ্ন করছেন, ইরান যদি হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেয়, তাহলে কী হবে? এর প্রভাব হবে সারা বিশ্বে। ইরান ও ইসরায়েলের উত্তেজনার মাঝেই ইরান এমন হুমকি দিয়েছে বলে জানিয়েছে আলজাজিরার একটি প্রতিবেদন। হরমুজ প্রণালী একটি সরু জলপথ। এটি ইরান ও ওমানের মাঝখানে অবস্থিত। এ পথ দিয়েই প্রতিদিন বিশ্বের ২০ ভাগ তেল পরিবহন করা হয়। এ তেলের পরিমান প্রায় ১৭ মিলিয়ন ব্যারেল। তাই তেল পরিবহনের এ পথ বন্ধ হলে বিশ্বে তেল সরবরাহে বিশাল সমস্যা হবে যা বিশ্ববাজারেও বিশাল প্রভাব ফেলবে।ইরান যদি এই প্রণালী বন্ধ করে দেয়, তবে তেলের দাম হঠাৎ করেই অনেকটা বেড়ে যাবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতি ব্যারেল তেলের দাম ১৫০ ডলারের উপরে উঠে যেতে পারে, যা বর্তমানে ৭৩ ডলারের আশেপাশে আছে। এতে জ্বালানি নির্ভর দেশগুলো অনেক সমস্যায় পড়বে। ভারত, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।যদিও এখন অনেক দেশ নিজেদের তেল উৎপাদন করে, কিন্তু তবুও হরমুজ প্রণালীর ওপর বিশ্ব অর্থনীতি অনেকটা নির্ভরশীল।বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে বিপর্যয়

এই পথ দিয়ে শুধু তেলই নয়, প্রাকৃতিক গ্যাসও যায়। কাতার থেকে প্রচুর পরিমাণে গ্যাস রপ্তানি হয় এ প্রণালী দিয়ে। হরমুজ প্রণালী বন্ধ হলে এই গ্যাস সরবরাহও বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হবে। বিশ্বের বাজারে দাম বেড়ে যাবে নিত্যপণ্যের দামও। জাহাজ চলাচলের খরচ বেড়ে যাবে। ফলে সব কিছুর দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে বলে ধারনা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তেলের জোগানে কী হবে?

প্রতিদিন প্রায় ১৭ মিলিয়ন ব্যারেল তেল এই প্রণালী দিয়ে যায়। এই তেল যাওয়া বন্ধ হলে, তেল-নির্ভর দেশগুলো তাড়াতাড়ি সমস্যায় পড়বে। তেলের জোগান কমে যাবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তেলের দাম ৩০ থেকে ৫০ ডলার বাড়তে পারে প্রতি ব্যারেলে। এতে দাম একশ ডলার ছাড়িয়ে যাবার আশঙ্কাও রয়েছে।

তেলের দাম বাড়লে বিশ্বব্যাপী প্রভাব কী হবে?

সাধারণ মানুষের জন্য জ্বালানির দাম বাড়বে
পণ্য পরিবহন খরচ বাড়বে
অনেক দেশে মূল্যস্ফীতি আবার বাড়বে
শেয়ারবাজারে ওঠানামা শুরু হতে পারে
অনেক দেশ হয়তো তাদের মজুদ তেল ব্যবহার শুরু করবে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে তাতে সব সমস্যা মিটবে না।
যুদ্ধের আশঙ্কা

হ্যাঁ, কারণ যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশ অনেক আগেই বলেছে তারা এই প্রণালী বন্ধ হতে দেবে না। ইরান যদি সত্যি এটা বন্ধ করে, তাহলে সামরিক প্রতিক্রিয়া আসতে পারে। এতে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা বেড়ে যাবে।

বিকল্প পথ আছে কি?

সৌদি আরবের একটি পাইপলাইন আছে যা লোহিত সাগর পর্যন্ত যায়। কিন্তু এই পথ দিয়ে সব তেল নেওয়া সম্ভব না। তাই কিছুটা সাহায্য হলেও, পুরো সমস্যার সমাধান হবে না।

এখনো হরমুজ প্রণালী খোলা আছে। কিন্তু ইরানের হুমকির কারণে বাজারে দুশ্চিন্তা বেড়েছে। বিশ্বনেতারা শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছেন এবং কূটনৈতিকভাবে সমাধান খুঁজছেন। কিন্তু যদি একদিন সত্যি এই প্রণালী বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে এর প্রভাব সারা দুনিয়ায় পড়বে এবং সেটা হবে খুবই দ্রুত।