
বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক এড. তাইফুল ইসলাম টিপু বলেছেন, বিএনপি শক্তিশালী হলে দেশ ও গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে। শনিবার (২ আগস্ট) বিকেলে নাটোরের গোপালপুর পৌরসভায় কয়েক হাজার বিএনপি নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শহীদদের স্মরণে আয়োজিত র্যালি শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।টিপু বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে জনগণের ওপর জগদ্দল পাথরের মতো বসেছিল। দেশে বাক-স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র ছিল না। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে এ দেশের ছাত্র-জনতা ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছে।
টিপু আরও বলেন, ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিএনপিকে অধিকতর শক্তিশালী করতে হবে। আওয়ামী লীগ আধিপত্যবাদী শক্তির ক্রীড়ানক হয়ে বিএনপিকে ধ্বংস করে গণতন্ত্র ধ্বংস ও দেশকে দুর্বল করতে চেয়েছিল। জনগণ তা ব্যর্থ করে দিয়েছে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে লালপুর ও বাগাতিপাড়ায় নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জনের মাধ্যমে তারেক রহমানের নেতৃত্বে নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সংগ্রাম শুরু হবে, সে কাফেলায় সংযুক্ত হতে সকলকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, রাজনীতির গতানুগতিক ধারার পরিবর্তন করতে হবে, জনগণের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করতে হবে। বিএনপিই সত্যিকারের জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে। যারা জনবিচ্ছিন্ন, তাদের রাজনীতি করার দিন শেষ।
তিনি বলেন, আওয়ামী দোসর, দুর্নীতিবাজ, লুটেরাসহ সমাজবিরোধীদের লালপুর ও বাগাতিপাড়ায় আর এক ইঞ্চিও জায়গা ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি আরও বলেন, আমি আপনাদের এই মাটির সন্তান। দীর্ঘ ৪৩ বছর সকল সময়ে আমি আপনাদের সুখে-দুঃখে পাশে থেকেছি। আজ যাঁরা বিএনপির নাম বিক্রি করে বিভিন্ন অনৈতিক কাজে জড়িত হচ্ছে এবং ক্ষমতা ও নমিনেশন বাগিয়ে নিয়ে এমপি হওয়ার দিবাস্বপ্ন দেখছে, তাদের জায়গা লালপুর ও বাগাতিপাড়ার মাটিতে হতে দেব না। একটি পরিবার দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করছে। অথচ সেই পরিবারের একজনের সঙ্গে আরেকজনের প্রকাশ্য কোন্দলের বলি হচ্ছে এ অঞ্চলের অসংখ্য সাধারণ নিরীহ মানুষ। অসংখ্য বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীও তাদের পারিবারিক ক্ষমতার দণ্ড থেকে মুক্তি পাচ্ছে না। শিকার হচ্ছে হামলা, মামলা ও নির্যাতনের। ক্ষমতার লিপ্সায় উন্মাদ হয়ে যে পরিবারটি দীর্ঘদিন লালপুর ও বাগাতিপাড়াকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টায় লিপ্ত, তাদের চেহারা আর দেখতে চায় না সাধারণ মানুষ। এমনকি নিজ দলের শত শত নেতাকর্মীও তাদের নির্যাতন ও মামলা-হামলা থেকে রেহাই পায়নি। এবার লালপুর ও বাগাতিপাড়ার সর্বস্তরের জনগণ জেগে উঠেছে, তারা আর বৈষম্যের শিকার হতে চায় না।টিপু বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করেছি। সেই স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন সামনে থেকে লড়েছি, অনেক মামলা খেয়েছি। অসংখ্য গুম-খুন হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ৩১ দফার ২৭ নম্বরে কৃষকের উৎপাদন ও বিপণন সুরক্ষা, কৃষি পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতকরণসহ কৃষকবান্ধব রাষ্ট্র গঠনের অঙ্গীকার করা হয়েছে। ২৩ নম্বর থেকে ৩১ নম্বর দফাগুলোতেও কৃষকদের কল্যাণে পরোক্ষভাবে নানা পরিকল্পনা রয়েছে। বিএনপি সরকার গঠন করলে গ্রামের উন্নয়ন ও কৃষকের স্বার্থ সংরক্ষণই হবে সরকারের অগ্রাধিকার।
বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি বলেন, বিএনপি কখনোই জনগণের রায় ছাড়া ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করেনি এবং ভবিষ্যতেও করবে না। আমাদের রাজনীতি দেশের জন্য—দিল্লি বা পিন্ডির ইশারায় নয়।