ঢাকা, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫,
সময়: ০৪:২৬:৪৮ AM

একটি দল জুলাই সনদে স্বাক্ষরের সুযোগ খুঁজছে: সালাহউদ্দিন

স্টাফ রিপোটার।। দৈনিক সমবাংলা
23-10-2025 08:30:48 PM
একটি দল জুলাই সনদে স্বাক্ষরের সুযোগ খুঁজছে: সালাহউদ্দিন

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, একটি রাজনৈতিক দল জুলাই সনদে স্বাক্ষর দেওয়ার জন্য সুযোগ খুঁজছে।বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘চব্বিশোত্তর বাংলাদেশে তারুণ্যের ভাবনায় শিক্ষা ও কর্মসংস্থান’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন,“দুটি রাজনৈতিক দল ছাড়া বাকি সবাই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন বিষয়ে একমত হয়েছে এবং স্বাক্ষর করেছে। তবে এই দুই দলের একটি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিল। এখন ওই দলটি স্বাক্ষর করার জন্য সুযোগ খুঁজছে এবং তাদের কিছু দাবি-দাওয়া রয়েছে। সে বিষয়ে আলোচনা চলছে। আশা করি, তাদের দাবির বিষয়ে একটি যৌক্তিক সমাধান আসবে।”

তিনি আরও বলেন,“গতকাল একটি রাজনৈতিক দল বলেছে, জনমতের চাপে বিএনপি গণভোট মেনে নিয়েছে। রাজনীতিতে কেউ মনে মনে সুখ অনুভব করলে তাতে অসুবিধা নেই, আমরা সেটিকেও স্বাগত জানাই। তবে আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি— জুলাই জাতীয় সনদ প্রণীত হয়েছে, স্বাক্ষরিত হবে এবং ঐতিহাসিকভাবে তা সম্পন্ন হবে।”

বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন,
“জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষরিত হওয়ার পর জনগণের সার্বভৌম সম্মতি নিতে গণভোট আয়োজন করা হবে। কারণ সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ। জনগণের সেই ইচ্ছার চূড়ান্ত প্রকাশই সংবিধান। তাই গণভোটে জনগণ ‘হ্যাঁ’ বললে সেটিই হবে আইনি ভিত্তি।”

তিনি আরও বলেন,
“রাষ্ট্র কোনো আবেগের ওপর চলে না; রাষ্ট্র চলে আইন-কানুন ও বিধি-বিধানের মধ্য দিয়ে। আলোচনার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় স্বার্থকে দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে রাখতে হবে, যেন ভবিষ্যতে আদালতে প্রশ্ন না ওঠে— জুলাই সনদ বৈধভাবে জারি হয়েছিল কি না। তাই রাজনৈতিক আবেগ নয়, সংবিধান মেনে এগোতে হবে।”

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন,
“বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতেই আমরা সিদ্ধান্ত নেব, জুলাই জাতীয় সনদের প্রজ্ঞাপন বা গেজেট নোটিফিকেশন কীভাবে করা হবে। যেভাবেই হোক, এটি শেষ পর্যন্ত জনগণের গণভোটের মাধ্যমে আইনি রূপ পাবে।”

শিক্ষা ও কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
“শুধু সরকারি বা বেসরকারি খাতে নয়, তরুণদের নিজ উদ্যোগে কর্মসংস্থানের মানসিকতা জোরদার করতে হবে। এজন্য প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করতে হবে।”

তিনি আরও যোগ করেন,
“শিক্ষা বাজেট বাড়ানোই যথেষ্ট নয়; এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। গবেষণা, স্কলারশিপ ও টেকসই জ্ঞানচর্চায় ব্যয় বাড়াতে হবে। মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপান্তর ছাড়া কোনো সংস্কারই কার্যকর হবে না।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন,
“জাতীয় মুক্তির জন্য গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো— যেমন বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন ও স্বাধীন গণমাধ্যম—এর শক্ত ভিত্তি গড়ে তুলতে হবে। এটাই প্রকৃত প্রাতিষ্ঠানিক রূপান্তর। এই রূপান্তর ঘটাতে পারলে জাতির মুক্তি আসবেই।”

সভায় সভাপতিত্ব করেন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)–এর সভাপতি অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন:
বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, ইউট্যাবের মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. এস এম হাফিজুর রহমান, স্টেট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আক্তার হোসেন খান, এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সোহাগ আউয়ালসহ জাতীয় রাজনৈতিক ও পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ।