ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫,
সময়: ১০:৪১:০১ PM

নির্বাসনে থেকেও ঐক্যের নেতৃত্বে তারেক রহমান

ষ্টাফ রিপোটার।। দৈনিক সমবাংলা
20-11-2025 09:05:56 PM
নির্বাসনে থেকেও ঐক্যের নেতৃত্বে তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, অনলাইন ও অফলাইনসহ জীবনের সব ক্ষেত্রে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অগ্রাধিকারভিত্তিতে পাঁচটি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বিএনপি। তিনি মনে করেন, দেশ এগিয়ে যেতে হলে মা, বোন, কন্যা ও নারী সহকর্মীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা অপরিহার্য। নিজের ৬১তম জন্মদিন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বার্তায় তিনি এ প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। নারীর সুরক্ষা ও ক্ষমতায়নে জরুরি ভিত্তিতে জাতীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিদিন অসংখ্য নারী শুধুমাত্র কথা বলা, কাজ করা, পড়াশোনা অথবা স্বাধীনভাবে বাঁচার চেষ্টা করার কারণে হয়রানি, হুমকি, ভয়ভীতি ও সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। এমন বাংলাদেশের স্বপ্ন বিএনপি দেখে না, এবং দেশের কন্যারাও এমন ভবিষ্যৎ চায় না। বর্তমানের ডিজিটাল বিশ্ব জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে গভীর প্রভাব ফেলছে, যা অস্বীকার করার সুযোগ নেই।

তারেক রহমান বলেন, মাঝে মাঝে তিনি ও তার স্ত্রী ভাবেন—তারা যে সময়ে বড় হয়েছেন, আজকের পৃথিবী তাদের কন্যার জন্য কতটা ভিন্ন। সুযোগ বাড়লেও ঝুঁকিও একইভাবে বেড়েছে, যা অনেক অভিভাবকেই উদ্বেগের মধ্যে রাখে।

তিনি নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যেসব উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন, তার মধ্যে রয়েছে—

জাতীয় অনলাইন সুরক্ষা ব্যবস্থা:
সাইবার বুলিং, হুমকি, ভুয়া পরিচয় ব্যবহার, ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস—এ ধরনের অভিযোগ জানাতে দ্রুত ও সহজ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। থাকবে ২৪ ঘণ্টার হটলাইন, অনলাইন পোর্টাল এবং প্রশিক্ষিত কর্মীর সমন্বয়ে দ্রুত সাড়াদান ব্যবস্থা। পাশাপাশি বড় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে বাংলা কনটেন্ট মডারেশন আরও কার্যকর করা এবং হয়রানিমূলক কনটেন্ট দ্রুত সরানো নিশ্চিত করা হবে।

সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত নারীদের সুরক্ষা:
সাংবাদিক, সমাজকর্মী, শিক্ষার্থী বা কমিউনিটি লিডার হিসেবে কাজ করা নারীদের সুরক্ষায় জাতীয় নির্দেশিকা, দ্রুত আইনি ও ডিজিটাল সহায়তার ব্যবস্থা এবং গোপনে অভিযোগ জানানোর সুযোগ তৈরি করা প্রয়োজন। কোনো নারীর সামাজিক বা জনসচেতনতামূলক কাজে অংশগ্রহণে বাধা দেওয়া যাবে না।

ডিজিটাল নিরাপত্তা শিক্ষা:
স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ওরিয়েন্টেশন সেশনে শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ডিজিটাল নিরাপত্তা দক্ষতা শেখানো হবে। প্রশিক্ষিত শিক্ষকরা ‘সেফটি ফোকাল পয়েন্ট’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। বার্ষিক সচেতনতা কার্যক্রম তরুণদের আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ডিজিটাল জগতে চলতে সহায়তা করবে।

সহিংসতা ও হয়রানির বিরুদ্ধে শক্তিশালী কমিউনিটি সাড়া:
কমিউনিটি হেল্প ডেস্ক, নিরাপদ সড়ক ও পরিবহন ব্যবস্থা, উন্নত সড়কবাতি, এবং ট্রমা-সেনসেটিভ রেসপন্ডারদের উপস্থিতি নারীর দৈনন্দিন চলাচলকে আরও নিরাপদ করবে এবং সহিংসতার শিকার নারীদের মানসিক আঘাত কমাতে সহায়তা করবে।

নারীর নেতৃত্ব ও অংশগ্রহণে সহায়তা:
লিডারশিপ ট্রেনিং, মেন্টরশিপ নেটওয়ার্ক এবং স্কুল-অফিসসহ কর্মক্ষেত্রে শিশুসেবা কেন্দ্র বৃদ্ধির মাধ্যমে নারীর নেতৃত্ব, সাফল্য ও সক্ষমতা বিকাশে সহায়তা করা হবে। তারেক রহমান মনে করেন, নারীরা এগিয়ে গেলে দেশও এগিয়ে যাবে।

তিনি কন্যাশিশু ও আগামী প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। তার বক্তব্যে তিনি বলেন, রাজনীতি, ধর্ম, বর্ণ বা লিঙ্গ—যে পরিচয়ই হোক, সবাই বিশ্বাস করে যে নারীর নিরাপত্তা ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হলে বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাবে।