বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, “আমরা সংঘর্ষ চাই না। কিন্তু কেউ যদি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করে, তা সহজে মেনে নেওয়া হবে না। বিএনপি সেই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার জন্য প্রস্তুত আছে।”বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘অপরাজেয় বাংলাদেশ’ উদ্যোগে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। সমাবেশের মূল দাবি ছিল—জোরপূর্বক গুমের ঘটনাগুলো দ্রুত তদন্ত করা এবং বিচার প্রক্রিয়ার অগ্রগতি নিশ্চিত করা।
ফারুক অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আপনারা আশ্বস্ত করেছেন যে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচন বাস্তবায়নে কেউ যেন বাধা না হয়ে দাঁড়ায়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন। আপনাদের পাশে আছে ১৮ কোটি মানুষ। তাই কারও কথায় কান না দিয়ে নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।”
তিনি আরও বলেন, “নির্বাচনের মাত্র তিন মাস আগে এমন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, যা নির্বাচনকে ব্যাহত করতে পারে। এই ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে আরও সতর্ক হতে হবে।”
বিএনপির দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের কথাও তুলে ধরে ফারুক বলেন, “বিএনপি কোনো ছোট দল নয়। শহীদ জিয়ার আদর্শের এই দল বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ১৬ বছর হাঁটু পানিতে দাঁড়িয়ে আন্দোলন করেছে। নেতাকর্মীরা পুলিশের ভয়ে কবরস্থানে ঘুমিয়েছে, রিকশা চালিয়ে জীবন চালিয়েছে। বিএনপিকে অবহেলা করে নির্বাচন নিয়ে সংশয় সৃষ্টি করলে তা প্রতিহত করার মতো সাহস আমাদের আছে।”
সাবেক চিফ হুইপ আরও বলেন, “গণতন্ত্রের জন্য যারা লড়েছেন, তাদের বলব—দেশ যখন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন কোনো ধরনের সংশয় তৈরি করা যাবে না যাতে নির্বাচন বানচালের দায় আপনাদের ওপর পড়ে।”
ফারুক বিএনপির সিনিয়র নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন, “আমরা এমন কোনো কাজ করতে চাই না, যার ফলে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের রক্ত বৃথা যায় বা ভারত যেন আবার বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের সুযোগ না পায়।”
তিনি অভিযোগ করেন, “যারা ১৬ বছর আয়না ঘর বানিয়েছিল, গুম ও খুন ঘটিয়েছে—চৌধুরী আলম ও ইলিয়াস আলীকে গুম করেছে—তাদের এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি। এই সরকার গত এক বছর চার মাসে তাদের মধ্যে কয়জনকে আইনের আওতায় এনেছে?”
ফারুক সরকারের উদ্দেশে বলেন, “আর দেরি নয়, দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দিন। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে নতুন সরকার গঠন করে আমরা গুম-খুনে জড়িতদের এবং বিচার বিভাগ ধ্বংসকারীদের বিচার করব।”
নাগরিক সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সহসভাপতি বাদল সরকার। আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হারুনুর রশিদ, দলের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন সিরাজী।
