দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে বিএনপিসহ আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দলকে সতর্ক ও সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেছেন, “ঐক্য ভাঙা যাবে না। এই জালিম ও লুটেরা শক্তিদের কোনোভাবেই সুযোগ দেওয়া যাবে না। তা হলে দেশের অস্তিত্ব ও স্বাধীনতা বিপন্ন হবে।”জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলন আয়োজিত ‘জাতীয় নির্বাচনে লেভেল প্লেইং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ এবং প্রশাসনে ঘাপটি মারা আওয়ামী লীগের দোসরদের গ্রেপ্তারের দাবিতে’ আয়োজিত এক নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। দুদু বলেন, “আমাদের মনে রাখতে হবে—গণহত্যাকারীরা পালিয়ে গেছে। ব্যাংক, বিমা ও দেশের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে তারা দেশকে পঙ্গু করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তারা এখনো সম্পূর্ণভাবে চলে যায়নি। তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “নির্বাচনের দাবি এ দেশের সাধারণ মানুষের। কৃষক, শ্রমিক, খেটে খাওয়া মানুষ তাদের ভোটাধিকার চায়। বিএনপি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান গত ষোল বছর ধরে মানুষের অধিকার আদায়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।”
খালেদা জিয়ার কারাবাসের প্রসঙ্গে দুদু বলেন, “আমাদের নেত্রীকে মিথ্যা মামলায় ১০ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছিল। তিনি প্রায় ছয় বছর আটক ছিলেন এবং পর্যাপ্ত চিকিৎসা পাননি। আল্লাহ তাকে রক্ষা করেছেন।”
তিনি বলেন, “আমাদের নেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধেও একের পর এক মামলা করা হয়েছে। তাকে এমনভাবে টার্গেট করা হয়েছে যেন দেশে ফিরলে তার নিরাপত্তা থাকবে না। তবে তিনি প্রস্তুতি নিচ্ছেন, দলও প্রস্তুত হচ্ছে।”
আগামী দিনের চ্যালেঞ্জের বিষয়ে বিএনপি নেতা বলেন, “যদি আমরা প্রস্তুত না থাকি, বিপদ আসতে পারে। দেশ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এমন একটি দলকে ক্ষমতায় আনতে হবে যারা পরীক্ষিত, মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ এবং কথা রাখে। আমি বিশ্বাস করি, সেই দল হলো বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)—যার প্রতীক ধানের শীষ, নেতা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান।”
ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের শপথ নিতে হবে—যারা হত্যাকারী ও গণহত্যাকারী, তারা যেন আর কখনো ক্ষমতায় ফিরতে না পারে। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।”
তিনি আরও বলেন, “চলুন আমরা সবাই সুশৃঙ্খল, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হই। যারা আগের তিনটি নির্বাচনে অনিয়ম করেছে, লুটপাটে জড়িয়েছে, তাদের যেন প্রশাসনে আর স্থান না হয়। সরকার বলেছে, এমন ব্যক্তিরা ভবিষ্যতে থাকবে না—এ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে হবে।”
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সভাপতি এম জাহাঙ্গীর আলম।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন: বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ, শাহা নেচারুল হক, কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহা আব্দুল্লাহ আল বাকি, পাঠাগারবিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজি, কৃষকদল নেতা শফিকুল ইসলাম সবুজ, রমিজ উদ্দিন রুমি, রবিউল ইসলাম তালুকদার রবি, আমির হোসেন দানেজ ও মো. মুসা ফরাজী প্রমুখ।
