ঢাকা, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫,
সময়: ০৮:৩৬:৫৬ PM

গণভোটে ‘না’ বলার সুযোগ কোথায়: রিজভী

ষ্টাফ রিপোটার।। দৈনিক সমবাংলা
15-11-2025 06:38:18 PM
গণভোটে ‘না’ বলার সুযোগ কোথায়: রিজভী

গণভোটের চারটি প্রশ্নের কোনো একটির সঙ্গে দ্বিমত থাকলে সেখানে ‘না’ বলার সুযোগ কোথায়, তা সরকারের কাছে জানতে চেয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।শনিবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর শ্যামলীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে অসুস্থ বেতার শিল্পী আফরোজা নিজামীকে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠান শেষে এই প্রশ্নটি করেন তিনি। এ সময় বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমনসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।রিজভী বলেন, “গোঁজামিল দিয়ে কোনো কিছু করা হলেও তা টেকসই হবে না। যদি ৯০ ভাগ মানুষ গণভোটের উদ্দেশ্য ঠিকমতো না বুঝতে পারে, তাহলে তারা বিভ্রান্তির মধ্যে থাকবে।” তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষ বিষয়টি বুঝবে— সেই অনুযায়ী গণভোটের প্রশ্নমালা তৈরি করা উচিত।

বিএনপির মুখপাত্র রিজভী বলেন, “গণভোটে যে চারটি প্রশ্ন রয়েছে, সেখানে ‘না’ অপশন নেই। একমত না হলে জনগণ কীভাবে তাদের মত প্রকাশ করবে, তা প্রশ্নমালায় উল্লেখ নেই।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “সারাদেশে অনেক মানুষ দুর্ভোগে আছে, কিন্তু এসব দুর্ভোগ লাঘবে রাষ্ট্রের কোনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। স্বাধীনতার পর থেকে সেবামূলক কাজে রাষ্ট্রের দায়িত্ব যথেষ্টভাবে পালন হয়নি। গণভোট ও পিআরসহ নানা দাবি না তুলে রাজনৈতিক দল ও রাষ্ট্রের উচিত মানুষের অধিকার নিশ্চিত করা।”

রিজভী বিএনপির পক্ষ থেকে জুলাই সনদ প্রসঙ্গে বলেন, “জুলাই সনদ জাতির সামনে যথাযথভাবে উপস্থাপন করা হয়নি। এটি আরও স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করা দরকার ছিল।”

তিনি অভিযোগ করেন, “ভারত থেকে বিপুল অর্থের মাধ্যমে দেশে নাশকতা তৈরির চেষ্টা করছে ruling party। তারা দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করতে চাচ্ছে। শেখ হাসিনার বিচারের বিষয় আদালতের, তবে মানুষ হত্যার সুষ্ঠু বিচার চায়।”

দেশের পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, “পতিত স্বৈরাচার পাশের দেশ থেকে নানা ষড়যন্ত্র করছে। ঢাকা-গাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় গাড়ি পুড়িয়ে সহিংসতা চালাচ্ছে। এটি হলো সেই রাজনৈতিক সংস্কৃতি। সরকার প্রথম থেকেই ফ্যাসিবাদের বিষদাঁত ভেঙে দিত, তাহলে এ অবস্থা হতো না।”

গণভোটে চারটি প্রশ্ন

১. তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান:
নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হবে।

২. দুই কক্ষবিশিষ্ট সংসদ:
আগামী সংসদ হবে দুই কক্ষবিশিষ্ট। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ সদস্যবিশিষ্ট উচ্চকক্ষ গঠিত হবে। সংবিধান সংশোধন করতে হলে উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন প্রয়োজন।

৩. জুলাই সনদের ৩০টি প্রস্তাব বাস্তবায়ন:
সংসদে নারীর প্রতিনিধি বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং স্থানীয় সরকারসহ অন্যান্য বিষয়ে যে ৩০টি প্রস্তাবে জুলাই জাতীয় সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য হয়েছে, তা আগামী নির্বাচনে বিজয়ী দলগুলো বাধ্যতামূলকভাবে বাস্তবায়ন করবে।

৪. জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কার:
জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাস্তবায়ন করা হবে।