
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, আপনার মতো একজন গুণীজন, সচেতন ব্যক্তিকে বাংলাদেশে এমন একটি জায়গায় বসিয়েছে, যে ব্যক্তিটির তিন মাসের মধ্যে একটি নির্বাচন করার যোগ্যতা ছিলো। কেন সাড়ে নয় মাস অতিবাহিত হলো?সোমবার (২ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে অপরাজেয় বাংলাদেশ কর্তৃক 'শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী ও বাংলাদেশের গণতন্ত্র' শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে ফারুক বলেন, আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করে নিজেই উত্তর পাইনা। কেন আমাদের দলের সব সিনিয়র নেতাদের প্রত্যেকদিন বলতে হবে নির্বাচনের কথা। আপনার কী চীফ জাস্টিস শাহবুদ্দিনের কথা মনে নাই? তিনি তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন উপহার দিয়েছিলেন। আপনাকে কেন সাড়ে নয় মাস অতিবাহিত করতে হবে? তিনি বলেন, বাংলাদেশের তরুণ সমাজ রাজনৈতিক দল মিলে যখন একটা ঐক্য সৃষ্টি করলো ড. ইউনূসের নেতৃত্বে সেই ঐক্যটা বিনষ্ট করা হচ্ছে কেন? কার প্রলোভনে, কার কোন কথায়? বাংলাদেশে সাড়ে নয় মাস অতিবাহিত হলো এখনো সংস্কার...সংস্কার। শাহবুদ্দিন নির্বাচন কমিশন সংস্কার করে আইন-শৃঙ্খলা পুনর্গঠন করে নির্বাচন দিয়ে দিয়েছিলেন। আজকে আপনিও পারবেন। শুধু নির্বাচন কমিশনটা হওয়ার পরে সকল দলকে নিয়ে যারা রাস্তায় ছিলো, যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে, যারা গণতন্ত্রের কথা বলেছে, ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে কথা বলেছে তাদেরকে নিয়ে আপনি একটি নির্বাচন দিয়ে দিতে পারেন।
এনসিপির উদ্দেশ্যে বিরোধীদলের সাবেক এই চিপ হুইপ বলেন, রাজনীতি করবেন ওয়েলকাম, গ্রামে যান মানুষকে বুঝান। আপনারা কী সেই আইডিয়োলজি প্রচার করেন। আইডিয়োলজি প্রচার না হতেই এখনো ঢাকা শহরে বসে বসে আটলান্টিক মহাসাগরের মতো দল বিএনপির সমালোচনা করছেন আপনারা। এক লুটেরা গেলে আরেক লুটেরা আসবে। আর এই লুট সাড়ে নয় মাসে কারা করছে হিসাব বের হবে।
তিনি বলেন, সাড়ে নয় মাসে দশবার বিদেশে গেলেন, আমার আক্ষেপ নাই উনি যাবেই। উনার কথা আমরা শুনবো। কিন্তু এমন কথা বলা ঠিক না যেটাতে বাংলাদেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা আপনার উপরে ক্ষুন্ন হবে, মনে কষ্ট হবে। নির্বাচন শুধু আমরা চাই? হিসাব করে দেখেন কয়টা রাজনৈতিক দল নির্বাচন চায়। নির্বাচন চাই বলে আমরা ক্ষমতায় যাবো এই কথাতো বলিনা। আমরা চাই একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে একটি দলীয় সরকার ক্ষমতায় যাবে, সরকার গঠন করবে। তখনই সিদ্ধান্ত নিবে যে করিডর, বন্দর দিবো কিনা।
ডক্টর ইউনুস এর উদ্দেশ্যে সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, বেসিক কাজ করার জন্য ক্ষমতায় বসিয়েছি। আপনার কাছে আমাদের অনেক আশা। সেই আশা চূর্ণ-বিচূর্ন করে দিচ্ছে কারা? সেটা খুঁজে বের করতে হবে। তাই বিএনপি বলে, যারা এখনো সরকারে বসে আরেকটি রাজনৈতিক দলকে সহায়তা করে তাদেরকে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। সেটা না করে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কী করে।
আয়োজক সংগঠনের সহ-সভাপতি আমজাদ হোসেন চয়নের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন সিরাজী ও সহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।