ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫,
সময়: ০৮:৪০:২৪ AM

জিয়া পরিষদ কর্মসংস্থান ব্যাংকের কমিটির বেশী আওয়ামীলীগ

স্টাফ রিপোটার।। দৈনিক সমবাংলা
22-12-2025 07:22:22 PM
জিয়া পরিষদ কর্মসংস্থান ব্যাংকের কমিটির বেশী আওয়ামীলীগ

জিয়া পরিষদ কর্মসংস্থান ব্যাংকের অনুমোদিত আহবায়ক কমিটির অধিকাংশই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।  ইতিমধ্যে ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে বিএনপি মহাসচিব, জিয়া পরিষদসহ অন্যান্য সংগঠন বরাবর আবেদনও করা হয়েছে। জানা গেছে, জিয়া পরিষদের  চেয়ারম্যান ও  মহাসচিবকে ভুল বুঝিয়ে এই কমিটির অনুমোদন নেয়া হয়েছে। সূত্র মতে, গত ২৪ নভেম্বর জিয়া পরিষদের মহাসচিব প্রফেসর ড. মো: এমতাজ হোসেন সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জিয়া পরিষদের কর্মসংস্থান ব্যাংকের ৩১ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে শহীদ-উজ-জামান মুক্তাকে আহবায়ক, মো: শহিদুজ্জমান স্বপনকে সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক, মিজানুর রহমান মিজানকে আহবায়ক করা হয়। 
অভিযোগ উঠেছে, শীর্ষ এই তিন নেতাই আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। এদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ে অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ পত্রে বলা হয়েছে, আহবায়ক শহীদ-উজ-জামান মুক্তা ইতিপূর্বে বিএনপি বা জিয়া পরিষদের কোন সাংগঠনিক কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন না। এমনকি জাতীয়তাবাদী দলের কোন কর্মসূচতেও অংশগ্রহণ করেননি। বিগত আওয়ামী সরকারের সময় তিনি স্বৈরাচারের সব কাজের দোসর ছিলেন এবং অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন। জাতীয় শোক দিবস থেকে শুরু করে ব্যাংকে আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রমের অংশগ্রহণ করেছেন, যা তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ারও করেছেন। 
কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক শহীদুজ্জামান স্বপন কর্মসংস্থান ব্যাংকের বঙ্গবন্ধু পরিষদের সমাজকল্যাণ সম্পাদক ছিলেন। আওয়ামী লীগের প্রেডিয়াম কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক মন্ত্রী শাহাজান খানের সাথে তার খুব সখ্যতা ছিল। ব্যাংকের জাতীয়তাবাদী ঘরোনার স্টাফদের নিয়মিত ভয়ভীতি দেখাতেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। 
কমিটির যুগ্ম আহবায়ক মিজানুর রহমান মিজান ব্যাংকে আওয়ামী ঘরানার লোক বলেই সবাই জানে। ব্যাংকের বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রায় সব কর্মসূচিতে তার সরব উপস্থিতি ছিল বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। ফেসবুকেও তিনি প্রায়শ বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাথে তার কার্যক্রম গুলো প্রচার করেছেন।  
এছাড়া ৩১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে আরও ১৫/১৬ জন আছেন, যারা আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। এদের মধ্যে যুগ্ম আহবায়ক মো: নাসিমুল হক ও তালিম হোসেন ও সদস্য মো: গাজী গোলাম শোয়েব বঙ্গবন্ধুর পরিষদের কর্মসংস্থান ব্যাংকর নেতা ছিলেন। এছাড়া বাকি সদস্যদেরও কেউ চিনেন না। 
ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে দেয়া সেই আবেদনে বলা হয়, আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত, অযোগ্য ও সাংগঠনিক দক্ষতাবিহীন ব্যক্তিদের দিয়ে জিয়া পরিষদ গঠিত হলে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। একইসাথে দেশের সবচেয়ে বড় ও জনপ্রিয় দল বিএনপির সুনাম মারাত্বকভাবে ক্ষুন্ন হবে। আবেদনে প্রকৃতি জিয়া প্রেমিকদের দিয়ে কমিটি গঠনের দাবি জানানো হয়।  
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জিয়া পরিষদের মহাসচিব প্রফেসর ড. মো: এমতাজ উদ্দিন বলেন, কর্মসংস্থান ব্যাংকের অনুমোদিত কমিটির অনেকেই আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত বলে আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। আমরা খবর নিয়ে জেনেছি, অনেকেই আছেন, যারা আওয়ামী রাজনীতির সাথে ছিলেন। তিনি বলেন, কমিটিতে কারা আছেন সেই বিষয়ে তিনি ও জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান সেভাবে জানতেন না। তাদের কাছে জিয়া পরিষদের একজন যুগ্ম আহবায়ক কমিটির তালিকা নিয়ে এসেছেন। কমিটির সবাই বিএনপির আদর্শে বিশ্বাসী বলায় তারা শুধু সাক্ষর করেছেন। কমিটিতে কারা আছেন তাদের বিষয়ে তিনি ও জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্ত করছি। শীঘ্রই অভিযুক্তদের বাদ দিয়ে জাতীয়তাবাদী দলের লোকদের দিয়েই কমিটি করা হবে। 
আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে আহবায়ক শহীদ-উজ-জামান মুক্তা বলেন, আওয়ামী আমলে আমাদের অনেককেই ১৫ আগস্টসহ বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। তার মানে এই নয় যে, আমরা আওয়ামী রাজনীতি করি। তিনি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, আমি কখনোই আওয়ামী রাজনিিতর সাথে জড়িত ছিলাম না। তবে তিনি ঘোষিত কমিটিতে বেশ কয়েকজন আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত ও কমিটিতে ছিলেন বলে স্বীকার করে বলেন, পূণাঙ্গ কমিটি করার সময় আমরা এদের বাদ দিব। একইসাথে জাতীয়তাবাদী আদর্শের বিশ্বাসীদের মধ্যে যারা আহবায়ক কমিটিতে নেই তাদের অন্তভূক্ত করে কমিটি ফাইনাল করবো।