ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫,
সময়: ১২:২৯:৫৯ AM

আজ দেশে ফিরছেন গণতন্ত্রের মহানায়ক

মান্নান মারুফ
24-12-2025 09:08:36 PM
আজ দেশে ফিরছেন গণতন্ত্রের মহানায়ক

নির্যাতন, নিপীড়ন এবং জীবন-মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েও যিনি কখনো গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপোষ করেননি—সেই বহু গুণের অধিকারী, দূরদর্শী ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম প্রধান মুখ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আজ বৃহস্পতিবার দেশে ফিরছেন। দীর্ঘ সময় পর তার এই প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা, প্রত্যাশা ও উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা একে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে দেখছেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দলীয় কার্যালয়গুলোতে সাজসাজ রব বিরাজ করছে। পোস্টার, ব্যানার ও স্লোগানে মুখর হয়ে উঠছে বিএনপির রাজনৈতিক অঙ্গন। নেতাকর্মীদের বিশ্বাস, তার প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে দলীয় কার্যক্রমে নতুন গতি আসবে এবং চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলন আরও সুসংগঠিত ও বেগবান হবে।

বিএনপির নেতারা বলছেন, তারেক রহমান এমন একজন নেতা যিনি বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী। তিনি একাধারে একজন দক্ষ সংগঠক, কৌশলী রাজনীতিক, প্রখর বিশ্লেষক এবং আপসহীন গণতন্ত্রকামী নেতা। কঠিন রাজনৈতিক বাস্তবতা, দমন-পীড়ন ও নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও তিনি দলের হাল শক্ত হাতে ধরে রেখেছেন। নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রাখা, আন্দোলনের কৌশল নির্ধারণ এবং গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের প্রশ্নে দৃঢ় অবস্থান বজায় রাখাই তার নেতৃত্বের প্রধান বৈশিষ্ট্য বলে মনে করেন দলটির সিনিয়র নেতারা।

দূরদর্শী নেতৃত্বগুণের কারণে তারেক রহমান বিএনপির রাজনীতিতে একটি অনন্য অবস্থান তৈরি করেছেন। দলের একাধিক নেতা বলেন, রাজনৈতিক সংকট যত গভীরই হোক না কেন, তিনি কখনো হতাশ হননি। বরং ধৈর্য, কৌশলগত প্রজ্ঞা ও বাস্তববাদী সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দলকে সামনে এগিয়ে নিয়েছেন। এই গুণগুলোই তাকে একজন পরিণত, দায়িত্বশীল ও সময়োপযোগী রাজনৈতিক নেতায় পরিণত করেছে।

স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে তারেক রহমানের ভূমিকা বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ও আলোচিত। দলের নেতাকর্মীদের মতে, ব্যক্তিগত জীবনে নানা নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হলেও তিনি কখনো গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপস করেননি। এই দৃঢ়তা ও ত্যাগই তাকে গণতন্ত্রকামী মানুষের কাছে একজন নায়কের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে। তিনি কেবল বক্তৃতা বা বিবৃতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নন; বরং মাঠের আন্দোলন, সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি এবং ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক রূপরেখা প্রণয়নে সক্রিয় ভূমিকা রেখে চলেছেন।

বিএনপির একাধিক নেতা মনে করেন, তারেক রহমানের সবচেয়ে বড় গুণ হলো তার সংগঠকসত্তা। তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত দলকে সুসংহত করার ক্ষেত্রে তিনি অসাধারণ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ, তাদের অভাব-অভিযোগ শোনা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী দিকনির্দেশনা দেওয়ার মধ্য দিয়ে তিনি একজন প্রেরণাদায়ী নেতায় পরিণত হয়েছেন। তার নেতৃত্বে অনেক তরুণ নেতা রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন বলেও দাবি করেন তারা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় তারেক রহমানের দেশে ফেরা বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। দেশের রাজনীতি যখন নানা চ্যালেঞ্জ, অনিশ্চয়তা ও মেরুকরণের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তখন একজন অভিজ্ঞ, কৌশলী ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী নেতার সক্রিয় উপস্থিতি রাজনৈতিক ভারসাম্যে প্রভাব ফেলতে পারে। তারা মনে করেন, তার প্রত্যাবর্তনের ফলে বিরোধী রাজনীতিতে নতুন গতি আসতে পারে এবং গণতন্ত্রকেন্দ্রিক আলোচনা ও আন্দোলনের ক্ষেত্র আরও বিস্তৃত হবে।

বিএনপির সিনিয়র নেতারা আরও বলেন, তারেক রহমান কেবল একজন রাজনৈতিক নেতা নন; তিনি একজন রাষ্ট্রনায়কসুলভ ব্যক্তিত্ব। তার বক্তব্যে যেমন প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতার প্রতিফলন ঘটে, তেমনি সিদ্ধান্ত গ্রহণেও তিনি দায়িত্বশীল ও সময়োপযোগী ভূমিকা রাখেন। গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার ও জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে তিনি বরাবরই আপসহীন অবস্থানে রয়েছেন।

নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা, তারেক রহমানের দেশে ফেরার মাধ্যমে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে। তারা বিশ্বাস করেন, তার সরাসরি উপস্থিতি তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আত্মবিশ্বাস বাড়াবে।

সব মিলিয়ে, বহু গুণের অধিকারী ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির একজন গুরুত্বপূর্ণ নায়ক হিসেবে তারেক রহমানের দেশে ফেরা শুধু বিএনপির জন্য নয়, দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের জন্যও তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তার এই প্রত্যাবর্তন ভবিষ্যৎ রাজনীতির গতিপথে কী ধরনের প্রভাব ফেলবে, তা এখন সময়ই নির্ধারণ করবে।